ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘নীরব দর্শক হতে পারে না বিচার বিভাগ’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৪ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৭
‘নীরব দর্শক হতে পারে না বিচার বিভাগ’ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি। ছবি: সুমন

ঢাকা: রাষ্ট্রের অন্য দু’টি অঙ্গ যখন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তখন বিচার বিভাগ নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে মঙ্গলবার (০৯ মে) ‘বিচারিক স্বাধীনতা’ শীর্ষক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
 
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট ও কমনওয়েলথ ম্যাজিস্ট্রেট অ্যান্ড জাজেস অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে অধস্তন আদালতের বিচারকদের তিন দিনের এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।


 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইন ও নির্বাহী বিভাগের কাজের ওপর বিচারিক পর্যালোচনার মাধ্যমে ও কার্যকরভাবে পর্যবেক্ষকের (ওয়াচডগ) দায়িত্ব পালন করছেন আদালত। সাংবিধানিক পদ্ধতির অধীনে স্বাধীন বিচার বিভাগ এ দায়িত্ব পালন করে। রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের ভূমিকা সঠিকভাবে অঙ্কনের মাধ্যমে সংবিধানকে সমুন্নত রাখা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান অবদান’।
 
তিনি বলেন, ‘যখন রাষ্ট্রের দু’টি অঙ্গ তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তখন বিচার বিভাগ নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকতে পারে না। আইনের সীমার মধ্যে থেকে সুপ্রিম কোর্ট সব সময় সংবিধানের অন্যতম অভিভাবক হিসেবে দাঁড়িয়েছেন’।
 
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘বিচারিক স্বাধীনতা মানে কোনো ধরনের প্রভাব বা হস্তক্ষেপ ছাড়া বিচারকের ক্ষমতা প্রয়োগ করা। বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার মূল ও ঐতিহ্যগত অর্থ হলো- সরকারের রাজনৈতিক শাখাগুলো থেকে বিশেষত নির্বাহী সরকার থেকে বিচারকদের সামষ্টিক ও স্বতন্ত্র স্বাধীনতা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ধারণা কোনো শস্যভাণ্ডারের মতো নয়, যা শুধু বিচারকদের ওপর নির্ভর করে। এ প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা আইনি কাঠামোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এ কাঠামোর মধ্যে থেকে বিচার বিভাগকে কাজ করতে হয়। এতে সরকারের সমর্থন ও রাষ্ট্রের অন্য অঙ্গগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন’।
 
ব্যক্তিগতভাবে একজন বিচারকের পরিপূর্ণ স্বাধীনতার উপাদানগুলো হলো- ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, পারিপার্শ্বিক স্বাধীনতা এবং অভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
 
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘কমনওয়েলথভূক্ত দেশগুলোর বিচার বিভাগের চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে- অবকাঠামোগত স্বাধীনতা, জুডিশিয়ারিতে আইসিটির বিচারিক দায়বদ্ধতা, বিচারপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা, সচেতনতা, শক্তিশালী সুশীল সমাজ, আইনজীবী সমিতি ও বেঞ্চের (আদালত) সুসম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতার অভাব’।
 
কমনওয়েলথ দেশের সরকারগুলো কমনওয়েলথ লিগ্যাল রিচার্স জুডিশিয়াল একাডেমি স্থাপন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। যেখানে সবাই তাদের অভিজ্ঞতা আদান-প্রদান করবেন। একইসঙ্গে সন্ত্রাস সম্পর্কিত এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মামলার বিষয়েও আলাপ-আলোচনা করবেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের চিফ ম্যাজিস্ট্রেট রয় রিনাউডে, ইংল্যাণ্ডের বিচারক শামীম কোরাইশী, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের আইন উপদেষ্টা মার্ক গোথরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।