ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পিরোজপুরে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড,৭ জনের যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৭
পিরোজপুরে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড,৭ জনের যাবজ্জীবন

পিরোজপুর: পিরোজপুর সদর উপজেলার কালিকাঠি গ্রামের ফিরোজ মাঝি (২২) হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুর সোয়া ১টায় পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম জিল্লুর রহমান এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন-পিরোজপুর সদর উপজেলার কালিকাঠি গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ মোল্লার ছেলে সাহিনুর রহমান মোল্লা (৩৫), আমির আলী খানের ছেলে রেজাউল খান (১৯) ও হাকিম বেপারির ছেলে মিজান বেপারি (২২)।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন-উপজেলার কালিকাঠি গ্রামের আমির আলী খানের স্ত্রী রেকসোনা বেগম (৩৫), হাবিব মাতুব্বরের ছেলে মামুন মাতুব্বর (১৯), সেলিম মিয়ার ছেলে মো. রাসেল (১৯), আনসার উদ্দিন শেখের ছেলে সুমন শেখ (১৮), হাকিম তালুকদারের ছেলে লিমন তালুকদার (১৯), হালিম আকনের ছেলে নিজাম আকন (১৮) ও তোফাজ্জেল হোসেন শেখের ছেলে ওমর ফারুক শেখ (১৯)।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাহিনুর রহমান মোল্লা ও রেজাউল খান আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর পলাতক। অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
 
আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত ফিরোজ মাঝির বাবার নাম আব্দুস সাত্তার। তিনি পিরোজপুর ডিসি অফিসে মাস্টাররোলে এমএলএসএস কর্মচারী ছিলেন। ফিরোজের বাবার সঙ্গে মায়ের তালাক হওয়ার পর মাকে নিয়ে ফিরোজ সদর উপজেলার কালিকাঠি গ্রামে বসবাস করতেন।  

২০১১ সালের শেষদিকে ধুপপাশা গ্রামে জাহিদ হোসেনের সঙ্গে ফিরোজ মাঝির বোন রিমুর বিয়ে হয়। বিয়ের চার মাস পর রেজাউল খান সাহিনুর রহমানের মাধ্যমে বিবাহিত রিমুর পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। এরপর রেজাউল তার মা রেকসোনা ও সাহিনুর রহমান সরাসরি ফিরোজ মাঝির বাড়িতে গিয়ে রিমুকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ফিরোজ ও তার মা উত্তেজিত হয়ে গালাগালি করেন। তখন রোকসোনা বেগম বলেন রিমু কীভাবে জাহিদের সঙ্গে ঘর করে তা দেখে নিব। এ সময় রেজাউল খান ফিরোজকে মারধর করেন। এ ঘটনা নিয়ে সালিশ বৈঠকও হয়। বৈঠকে বিষয়টি মিমাংসা না হওয়ায় আসামিরা ফিরোজকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

২০১২ সালের ৪ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে ফিরোজ চরমোনাই পীরের মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরে। এ সময় বাড়ির উঠানে আগে থেকে ওত পেয়ে থাকা আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ফিরোজকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসাপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের মা নাসিমা বেগম পরেরদিন বাদী হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় দশ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর পুলিশ সাহিনুর, রেজাউল, নিজাম ও ওমর ফারুককে গ্রেফতার করে। ওমর ফারুক ছাড়া বাকী তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

ওই বছর ১৪ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদল কৃষ্ণ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পিপি খাঁন মো. আলাউদ্দিন ও আসামিপক্ষের ছিলেন আহসানুল কবির বাদল।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৬ ঘণ্টা, ৩১ জুলাই, ২০১৭/আপডেট:১৫৪০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।