ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে মামলার পরামর্শ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৭
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে মামলার পরামর্শ

ঢাকা: ‘হাইকোর্টে মিথ্যা ও সৃজনকৃত তথ্য দেওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অথবা আদালতের স্মরণাপন্ন হয়ে মামলা করতে প্রভাষক (শিক্ষা) মো. হাফিজুর রহমানকে পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিস’।

বুধবার (২৩ আগস্ট) ব্যারিস্টার রেহান হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক (শিক্ষা) মো. হাফিজুর রহমানকে দেওয়া চিঠিতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়’।

মো. হাফিজুর রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেহান হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা রিট মামলায় সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সৃজনকৃত তথ্য জমা দেওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিস’।

‘বুধবার মামলা করার এ পরামর্শ দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক (শিক্ষা) মো. হাফিজুর রহমানকে চিঠি দেওয়া হয়’।

পরে মোবাইল ফোনে ব্যারিস্টার রেহান হোসেন বলেন, ‘আমি আমার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিদের্শনার কথা বললেও এটি আসলে এক ধরনের পরামর্শ বা মতামত হবে’।

তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিসের কাছে হাফিজুর রহমান লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর রেজিস্ট্রার দফতর তাকে চিঠি দিয়ে বলেছেন- যেহেতু হাইকোর্টে রিট মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে, সেহেতু আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অথবা আদালতের স্মরণাপন্ন হয়ে মামলা করা যেতে পারে’।

‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক (শিক্ষা) মো. হাফিজুর রহমানের দায়ের করা ওই রিট মামলায় ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সৃজনকৃত তথ্য জমা দিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ওই মিথ্যা ও সৃজনকৃত তথ্য জমা দেওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে অভিযোগের ডকুমেন্টসের সত্যতা পেয়ে তাকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন’।  

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক (শিক্ষা) মো. হাফিজুর রহমান জাতীয় বেতন স্কেল- ১৯৯৭, ২০০৫ ও ২০০৯ অনুসারে বেতন-ভাতাদি পাওয়ার লক্ষ্যে আবেদন করলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ট্রেজারার প্রফেসর মো. নোমান-উর রশীদকে আহবায়ক, নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক ড. মাহমুদুর রহমানকে সদস্য এবং সহকারী রেজিস্ট্রার (আইন) মো. নজরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ৪ (চার) সদস্যের কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি হাফিজুর রহমানের আবেদন বিচার-বিশ্লেষণ করে জাতীয় বেতন স্কেল- ১৯৯৭, ২০০৫ ও ২০০৯ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিক সংবিধি (সংশোধিত সংবিধি-২)-এর ৪.৮ ধারার বিধান অনুসারে তাকে ৩টি (তিন) অর্থাৎ ৫ম গ্রেডে সিলেকশন গ্রেড স্কেল বা টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল বা ব্যক্তিগত স্কেল ভূতাপেক্ষভাবে দেওয়ার সুপারিশ করে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের  সিন্ডিকেটের ১৬৪তম সভায় ওই সুপারিশ গৃহীত হয়’।

‘কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও রেজিস্ট্রারসহ গুটিকয়েক কর্মকর্তা ওই সুপারিশ বাস্তবায়ন না করায় হাফিজুর রহমান আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে সংক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্ট বিভাগে ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদন দায়ের করেন। ওই রিট মামলায় আদালত জাতীয় বেতন স্কেল- ১৯৯৭, ২০০৫ ও ২০০৯ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি সংবিধি অনুসারে বাদীর ন্যায্য পাওনা কেন দেওয়া হবে না- জানতে চেয়ে ভিসি ও রেজিস্ট্রারসহ অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন’।

‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ অন্য কর্মকর্তারা ওই রুলের কপি হাতে পাওয়ার পর পূর্বপরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মো. হাফিজুর রহমানকে ক্ষতিগ্রস্ত ও পরাজিত করার হীন উদ্দেশ্যে ওই রিট মামলার শুনানির প্রাক্কালে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সৃজনকৃত তথ্য জমা দেন। ওই মিথ্যা ও সৃজনকৃত তথ্য জমা দেওয়ার ঘটনা জানার পর হাফিজুর রহমান গত ২৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে অভিযোগ করেন’।

‘এছাড়াও তিনি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ২০১৬ সালের ০৬ এপ্রিল রেজিস্ট্রার জেনারেলকে আরেকটি অভিযোগে জানিয়েছিলেন যে- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য রিট মামলায় বিভিন্ন জাল ডকুমেন্টস্‌ জমা দেওয়া হয়েছে এবং এ রিট মামলায়ও সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সৃজনকৃত তথ্য জমা দেওয়া হতে পারে। ওই অভিযোগের পরিপেক্ষিতে রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিস থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অথবা আদালতের স্মরণাপন্ন হয়ে মামলা করতে প্রভাষক (শিক্ষা) মো. হাফিজুর রহমানকে এ পরামর্শ দিয়ে চিঠিটি দেওয়া হয়’।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৭
ইএস/এসএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।