ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

খালেদার সাজা বাড়ানো নিয়ে রুল আদেশে সই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৮
খালেদার সাজা বাড়ানো নিয়ে রুল আদেশে সই

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনে জারি করা রুল আদেশে সই করেছেন হাইকোর্ট।

রোববার (০১ এপ্রিল) দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বাংলানিউজকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।
 
তিনি জানান, আদেশটি এখন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা বিবাদীদের পাঠাবেন।

গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এ আদেশে সই করেছেন। আমরা রোববার পেয়েছি।
 
গত ২৮ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় যেখানে সহযোগীদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, সেখানে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা কেন বাড়ানো হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
চার সপ্তাহের মধ্যে খালেদা জিয়া এবং রাষ্ট্রকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
 
ওইদিন আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, প্রধান অভিযুক্তকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা। অথচ সহযোগীদের দেওয়া হয়েছে ১০বছরের সাজা। এটা ডিসক্রিমিনেশন।
 
জয়নুল আবেদীন বলেছিলেন, আমরা দুদকের আবেদনের অনুলিপি পাইনি। তারপরেও বলি বিশেষ আইনে সাজা বাড়ানোর জন্য রিভিশনের সুযোগ নেই। দুদক এ আইনে আবেদন করতে পারে না। এরপর আদালত আদেশ দেন।
 
আদেশের পরে খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা কেন বাড়ানো হবে না, এই মর্মে আমরা আবেদন করেছিলাম। আমাদের আবেদনের মূল যুক্তিটা ছিল এই মামলায় খালেদা জিয়া প্রধান আসামি। প্রিন্সিপাল অ্যাকিউসড। উনাকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছর, আর যারা সহযোগী তাদের দেওয়া হয়েছে ১০ বছর। এটা আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়।

‘আদালত দুই পক্ষকেই শুনে আদালত আদেশ দিয়েছেন, মেটারটি এক্সামিন (বিষয়টি নিরীক্ষা) করা উচিৎ। এজন্য চার সপ্তাহের রুল ইস্যু করেছেন, কেন খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানো হবে না, এই মর্মে। চার সপ্তাহের মধ্যে খালেদা জিয়া এবং রাষ্ট্রকে এর জবাব দিতে বলেছেন আদালত। ’
 
খুরশীদ আলম খান আরও বলেছিলেন, খালেদা জিয়া যে আপিল দায়ের করেছেন এবং তার সহ-আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল যে আপিল দাখিল করেছেন, এই দু’টো আপিলের সঙ্গে রুলটিরও শুনানি হবে।
 
গত ২৫ মার্চ (রোববার) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দায়ের করা হয়।
 
এ মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। তবে তার ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের দশ বছর করে কারাদণ্ড দেন।
 
এর আগে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন বিএনপি প্রধান। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে পরদিন ১৩ মার্চ আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক।
 
১৪ মার্চ আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে) দায়ের করতে বলেন। একইসঙ্গে চার মাসের জামিন‍াদেশ ১৮ মার্চ (রোববার) পর্যন্ত স্থগিত করেন। এ আদেশ অনুসারে পরের দিন ১৫ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক লিভ টু আপিল দায়ের করেন।
    
এ আপিলের ওপর শুনানি হয় ১৮ মার্চ। শুনানি শেষে আদেশের জন্য ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আপিলের অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ।
 
একই সঙ্গে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ আপিলের শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৮
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।