ফজলুল হক উপজেলার নদমূলা-শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের হেতালিয়া গ্রামের মৃত খবির উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে।
মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) জেল সুপার মাহবুব আলম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলার মাহবুব আলম জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি ফজলুল হক বার্ধক্যজনিত কারণে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে কারারক্ষীরা তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি এর আগেও কয়েকবার বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর ভান্ডারিয়া উপজেলার ৫নম্বর ধাওয়া ইউনিয়নের পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের মৃত নিরোধ চন্দ্র বালার ছেলে বিজয় কৃষ্ণ বালা বাদী হয়ে তার পাশের গ্রাম হেতালিয়ার মৃত খবির উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মো. আমীর হোসেন হাওলাদার, মো. ফজলুল হক হাওলাদার, একই গ্রামের মৃত শামছুল হক হাওলাদারের ছেলে মো. নূরুল আমীন হাওলাদার ও মৃত আবুল হাসেম হাওলাদারের ছেলে আব্দুল মন্নানের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিক যুদ্ধাপরাধ আইনে পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক সত্যব্রত সিকদার মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে পাঠান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসামিরা মামলার বাদী বিজয় কৃষ্ণ বালার বাবা নিরোধ চন্দ্র বালা ও একই বাড়ির ছয়জনসহ মোট ২৬ জনকে গুলি করে হত্যা করেন।
১৯৭১ সালের ৯ কার্তিক ভোরে আসামিরা পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামে বিজয় কৃষ্ণ বালার বাড়িতে গিয়ে তাকে ও তার বাবাসহ সাতজনকে ধরে নিয়ে যান। এরপর পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের বনমালী গাছারুর বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে এক দড়িতে বেঁধে দাঁড় করিয়ে গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে বিজয় কৃষ্ণ বালা বেঁচে গেলেও তার বাবা নিরোধ চন্দ্র বালা, ছোট ভাই রনজিৎ বালা, বোনের স্বামী সুকুমার মিস্ত্রি, প্রতিবেশী গঙ্গাচরণ হালদার, অমূল্য মিস্ত্রি, সমীর মিস্ত্রি মারা যায়।
এছাড়া একই বছরের ২০ জ্যেষ্ঠ আসামিরা পূর্ব পশারিবুনিয়া গ্রামের উপেন্দ্র নাথ মিস্ত্রি, চিত্ত রঞ্জন বেপারি, সতীশ চন্দ্র বেপারি, শরৎ চন্দ্র মাঝি, প্রকাশ হালদারকে গুলি করে হত্যা করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় আরও ১৫ জনকে গুলি করে হত্যা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নারীদের ধর্ষণ করেন আসামিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৮
এজেডএস/ওএইচ/