তাদের বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গত ৭ জুলাই একদিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। সেই রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) বিপুল চন্দ্র দে।
এক ভুক্তভোগীর আবেদনক্রমে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মাস খানেক আগে তাদের আটক করে। তাদের কাছে থাকা ৭ লাখ ২২ হাজার টাকা, ২৯ হাজার নাইজেরীয় মুদ্রা, ২৩টি মোবাইল ফোন, ১৫টি পাসপোর্ট ছাড়াও বেশকিছু পোশাক জব্দ করা হয়।
ধানমণ্ডি থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পু্লেশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আস্রাব আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই আসামিদের মাস খানেক আগে গ্রেফতার করা হয়। সেসময় রিমান্ডের আবেদন করা হলেও করোনা পরিস্থতিতে রিমান্ড শুনানির সুযোগ ছিল না। তাই এই আসামিদের আজ রিমান্ড শেষে কারগারে পাঠানো হলো।
কারাগারে যাওয়া ১৬ নাইজেরিয়ান হলেন- সিমিজি ওয়েমা, আজিনা চুকুওয়াকু, সিমুবি এটাস গাবিরিয়েল, কেনুসুবু স্ট্যানলি এমবা, ওয়াকি সেলেসটাইন আবুচি, ওজুজুবু স্যামুয়েল ইকিনি, ওফুচুবু টসিবু ওহিন্নারা, ওবুকা সানডে ইমমানুয়েল, এনডুম্মাডু চিনিডা, ইনুগবালাইক অ্যান্থনি ওকাবিডিরি, চিবুফি ইজুনি ওভিনওয়ানি, উজুচুকুবা ডার্লিংটন চিকিলু, কেনিচুকুবা চালর্স অনবাওচু, ওজোরমাগবো হেনরি ইজিকি, চিবুজুর এনওনেটি ভিক্টর এবং এনোরুকা জিনিকা ফ্রান্সিস।
এছাড়া দুই বাংলাদেশি হলেন- মো. ইমরান হোসেন (৩২) এবং হারুন উর রশিদ (৩৫)।
এদিকে বৃহস্পতিবার সিআইডির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেত বলা হয়, ফেইসবুকে অপরিচিত একজনের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার পর এক ব্যক্তির সঙ্গে এই চক্রের সদস্যরা মেসেঞ্জার ও ওয়াটসঅ্যাপে তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। এক পর্যায়ে বিদেশি বন্ধু কিছু উপহার পাঠাবে বলে তাকে জানায়।
এরপর উপহার হিসেবে তাকে একটি আইফোন, আইপ্যাড ও কিছু ডলার পাঠানোর কথা জানানো হয়। কিন্তু কিছুদিন পর এক ব্যক্তি কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে তাকে ফোন করে বলেন, উপহারের ওই বাক্স দেশের নিয়ম অনুযায়ী কাস্টমস ডিউটি না দিয়েই আনা হয়েছে। সেজন্য এখন তাকে ৪৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির কথায় ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি ৪৫ হাজার টাকা একটি অ্যাকাউন্টে জমা করে দেন। কিন্তু পরে তাকে আবারও ফোন করে বলা হয়, উপহারের বাক্সে কিছু ডলার রয়েছে; সেজন্য তাকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে; তা না হলে কাস্টমস আইন ও মানি ল্ন্ডারিং আইনে মামলা হবে।
দ্বিতীয় দফা ফোন পেয়ে ওই ব্যক্তির সন্দেহ হয়। এরপর তিনি সিআইডির সাইবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এরপর সিআইডি প্রথমে এই চক্রে সরাসরি যুক্ত দুজন বাংলাদেশি এবং একজন নাইজেরীয়কে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের পল্লবী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২০
কেআই/এমএমএস