ঢাকা: জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম হত্যা মামলায় গ্রেফতার মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদ অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
বুধবার (১১ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সফিয়ান মো. নোমানের আদালতকে বিষয়টি অবহিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক ফারুক মোল্লা।
এ সময় তিনি নিয়াজ মোর্শেদকে আদালতে হাজির করতে হাজতি পরোয়ানা ইস্যুর আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, নিয়াজ মোর্শেদ গত ৪ অক্টোবর থেকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ডা. পরিতোষের অধীনে নিউরোলজি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি কোমর থেকে পা পর্যন্ত অবশজনিত রোগে আক্রান্ত। মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
চিকিৎসা শেষে সুস্থতা সাপেক্ষে আদালতে সোপর্দ করলে নিয়াজ মোর্শেদের বিরুদ্ধে হাজতি পরোয়ানা ইস্যু করা হবে বলে বিচারক আদেশ দেন।
এদিকে মামলটিতে মঙ্গলবার ১০ আসামির সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরা হলেন- মাইন্ড এইডের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, শেফ মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ ও ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান।
মামলার আসামিদের মধ্যে আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাদ আমিন ও মোছা. ফাতেমা খাতুন ময়না এখনো পলাতক রয়েছেন।
নিহত এএসপি আনিসুল করিমের পরিবারের সদস্যরা জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার (০৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধাস্তাধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুল করিমকে ৬ থেকে ৭ জন টেনে-হিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসাপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুইজন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় সোমবার রাতে প্রথমে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২০
কেআই/এমজেএফ