যশোর: যশোরে হত্যা মামলায় হারুনর রশিদ নামে এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এ মামলায় জাকির হোসেন নামে আরেক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিশেষ দায়রা জজ ও স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত হারুনর রশিদ যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব মোল্যার ছেলে। খালাসপ্রাপ্ত জাকির হোসেন একই উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে শাহাদত হোসেন ২০০০ সালের ২৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে বাহাদুপুর হাই স্কুলের সামনে চা-পান করছিলেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা শাহাদতকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। কিন্তু ওই সময় এক সন্ত্রাসীর হাত থেকে দা কেড়ে নেন শাহাদত। এতে ভয় পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। আর শাহাদত দৌড়ে একই গ্রামের নাজির মতিয়ার রহমানের বাড়ির পাশে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত শাহাদতের ভগ্নিপতি যশোর উপশহর ই-ব্লকের মৃত মেহের আলীর ছেলে ফজলুর রহমান বাদী হয়ে পরদিন অজ্ঞাতনামা আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন, এরপর এসআই খন্দকার মিজানুর রহমান এবং শেষে এসআই লিয়াকত আলী তদন্ত করেন। তদন্তকালে আরজান আলী, মাহমুদুর রহমানকে একই বছরের ১৬ অক্টোবর গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় জাকির হোসেন ও হারুনর রশিদকে। এর মধ্যে হারুনর রশিদ শাহাদতকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এ কারণে তদন্ত কর্মকর্তা হারুনর রশিদ ও জাকির হোসেনকে অভিযুক্ত এবং আরজান আলী, মাহমুদুর রহমানকে অব্যাহতি চেয়ে ২০০১ সালের ২৫ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পাশাপাশি হারুনর রশিদ ও জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। কিন্তু সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি হারুনর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেন। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি জাকির হোসেনকে এ মামলায় খালাস দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২১
ইউজি/আরআইএস