ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ সফর ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শিশু ধর্ষণ-হত্যা: ২ আসামি খালাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২১
শিশু ধর্ষণ-হত্যা: ২ আসামি খালাস

ঢাকা: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় ফাতেমা আক্তার ইতি (১০) নামে একটি শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় দুই আসামিকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।  খালাসপ্রাপ্তরা হলেন-মঠবাড়িয়া উপজেলার বুখইতলা গ্রামের মৃত জাহিদ হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান স্বপন ও মোস্তফা জমাদ্দারের ছেলে সুমন জমাদ্দার।



বুধবার (৩০ জুন) বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এএস এম আব্দুল মোবিনের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। আসামিদের পক্ষে ছিলেন  আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও নোয়াব আলী।

আসামিদের পক্ষে আইনজীবীর শিশির মনির জানান, সুমন জমাদ্দার ঘটনার সময় শিশু ছিলেন। কিন্তু নিম্ন আদালত সেটি বিবেচনায় না নিয়েই তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এবং তার স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করেই আরেকজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।  

আদালতে বলেছেন, শিশুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সাক্ষ্যগত কোনো মূল্য নেই। হাইকোর্ট আমাদের এসব যুক্তি শুনে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তাদেরকে খালাসের রায় দিয়েছেন।  

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

ফাতেমা জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে। সে একই উপজেলার বুখাইতলা-বান্ধবপাড়ায় নানা বাড়িতে থেকে স্থানীয় হাতেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর সকালে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য ওই বিদ্যালয়ের মাঠে যায় ফাতেমা। দুপুরেও ঘরে না ফেরায় স্বজনরা তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরদিন দুপুরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে তার মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তদন্তে দেখা যায়, শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে মামলার পুলিশ এ ঘটনায় ফাতেমার মামাতো ভাই মেহেদী হাসান স্বপনের সংশ্লিষ্টতা পান। পরে মেহেদী ও তার সহযোগী সুমনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।  

সুমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, তিনি ও মেহেদী মেয়েটিকে বাগডাসা দেখানোর লোভ দেখিয়ে বাগানে নিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি যাতে জানাজানি না হয় সেজন্য পরে তারা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করেন।

বিচার শেষে ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. গোলাম কিবরিয়া রায়ে দু’জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পরে নিয়ম অনুসারে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২১
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।