ঢাকা: গত ৯ মাস ধরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় সমাজচ্যুত তিন পরিবারকে শোষণ করা সমাজপতিদের প্রতিরোধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ভুক্তভোগী তিন পরিবারের করা এক রিট আবেদনের ওপর রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
রুলে ভুক্তভোগী তিন পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, মৌলভীবাজার জজ আদালতে স্বত্ব মামলা করে বিপাকে পড়েছেন তারা। মামলা দায়ের করার অপরাধে স্থানীয় কোরবানপুর গ্রামের পঞ্চায়েত কমিটির সদস্যরা ৫ বছরের জন্য সমাজচ্যুত করেছে ওই পরিবারকে। এতে তার সন্তানদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে। অন্যদিকে বয়সীরা হাটবাজার কিংবা মসজিদে যেতে পারছেন না।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, জমি-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গোষ্ঠীর চাচাতো ভাই পাখি মিয়ার সঙ্গে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি মীমাংসার জন্য সামাজিকভাবে মুরব্বিরা চেষ্টা করেন। উভয়পক্ষের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা জামানত নিয়ে গত বছরের ১৯ জুন সালিশ বৈঠকের তারিখ দেন গ্রাম্য মাতবররা। সালিশ বিচারকরা তার রেকর্ডীয় এক শতক ভূমি ফেরতের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। এরপর ভুক্তভোগী কাজল গত ৩ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সহকারী জজ আদালতে স্বত্ব মামলা দায়ের করেন। এতে কোরবানপুর গ্রামের সালিশ বৈঠককারীরা তার ওপর চরম ক্ষুব্ধ হন। ৫ ডিসেম্বর বিবাদী পাখি মিয়ার বাড়িতে পঞ্চায়েত বসিয়ে কাজল ও তার পরিবারকে সমাজচ্যুত (একঘরে) করা হয়। মামলা প্রত্যাহার না করলে ৫ বছরের জন্য তাকে সমাজচ্যুত হয়ে থাকতে হবে বলে তারা নির্দেশ দেন।
পরে তারা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে আবেদন করেও কোনো সুরাহা না পেয়ে আকমলসহ কয়েকজন হাইকোর্টে রিট করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১
ইএস/কেএআর