দিনাজপুর: দিনাজপুরে স্বামী হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রী ফাহমিনা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক মানিক রবিদাসকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আজিজ আহমদ ভুঞা রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান।
হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার ভবানীপুর
(ঘাসিপাড়া) এলাকার মৃত মজিদ প্রামাণিকের মেয়ে ফাহমিনা বেগম (৪৩) ও একই উপজেলার নিয়ামতপুর নতুনবাজার এলাকার সুশীল রবিদাসের ছেলে মানিক রবিদাস (৪৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর সকালে পার্বতীপুর
উপজেলার মোজাফফর হোসেন মহল্লার নিজ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মুদি ব্যবসায়ী আব্দুস ছালাম
মোল্লার মরদেহ পায় পুলিশ। পরে নিহতের বড়ভাই আবু হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে পার্বতীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকালে আব্দুস ছালামের স্ত্রী ফাহমিনা বেগমকে আসামি করা হয়। পরে তিনি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বেচ্ছায় হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন যে তার স্বামী আব্দুস ছালাম মোল্লা তাকে ও তার ধর্মভাই মানিক রবিদাসকে নিয়ে সন্দেহ করতেন। ফাহমিনার নামে তার স্বামীর জমি লিখে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে জমি লিখে না দেওয়ায় ক্ষোভ থেকে তিনি তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন ভোর ৪টায় ফাহমিনা মোবাইল ফোনে মানিক রবিদাসকে নিজেদের ঘরে ডেকে আনেন। পরে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে দু’জনে মিলে আব্দুস ছালাম মোল্লাকে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন। কিন্তু পরে নিহতের ভাই মামলা করলে পুলিশি তদন্তে এ হত্যায় নিহতের স্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। পরে তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ফাহমিনা ও মানিক রবিদাসের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
রাষ্ট্রপক্ষে ২১ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। এছাড়া আসামি ফাহমিনা বেগম নিজেই সাফাই সাক্ষী দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি লড়েছেন অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম। আসামিপক্ষের আইনজীবী
ছিলেন অ্যাডভোকেট হযরত আলী বেলাল।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১
এসআই