ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: রাষ্ট্রপক্ষের আপিল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: রাষ্ট্রপক্ষের আপিল

বরিশাল: তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সব অসামিদের খালাস দেওয়ার আদেশের অসম্মতিতে রাষ্ট্রপক্ষ ফৌজদারি আপিল দায়ের করেছেন।

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর আপিলটি দায়ের করেন।

আদালতের বিচারক মো. রফিকুল ইসলাম আপিলটি আমলে নিয়ে ৩০ নভেম্বর আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য ধার্য করেন।

আসামিরা হলেন- বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপি নেতা সরোয়ার আলম, মুকুল খান, হান্নান শরীফ, বদিউজ্জামান মিন্টু, আ. আউয়াল লোকমান, ঝিন্টু তালুকদারসহ ১৬ জন। সব আসামিদের বাড়ি গৌরনদী উপজেলায়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে ১ এপ্রিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা গৌরনদীতে জনসভায় যোগ দিতে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে আসামিরা তার গাড়িবহরে হামলা করেন। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। এর আগে জনসভা স্থলের মঞ্চে হামলা ও ভাঙচুর চালায় আসামিরা। দুই হামলায় গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন আহ্বায়ক কালিয়া দমন গুহ ও আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল হক গুরুতর আহত হন।

তখন বিএনপি ক্ষমতায় থাকায় মামলা দায়ের করতে ব্যর্থ হন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে গৌরনদী থানায় ২০০৯ সালের ২০ জুলাই মামলা দায়ের করেন। পরে তিনজন তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্ত শেষে ৪০ জন আসামির বিরুদ্ধে ২০১১ সালে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ২০১৩ সালের ১৯ মে জহির উদ্দিন স্বপনসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। ওই সময় ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিহাবুল ইসলাম আসামিদের খালাস দেন।

আপিলে উল্লেখ করা হয়, ওই রায়ে ৪০ জন আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন, ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ছয়জনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, অভিযোগকারী ও জখমি নুরুল হক এবং ডাক্তার সমির মিত্রের সাক্ষী গ্রহণ না করাসহ একাধিক কারণে রাষ্ট্রপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আপিল দায়েরকারী বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সড়কপথে বরিশাল সফরের সময় গৌরনদীতে আসার পরে বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপনের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মীরা তার গাড়িবহরে হামলা করেন। এতে অনেকে আহত হন এবং কেউ কেউ দীর্ঘদিন হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন।

এরপর তাদের (বিএনপি নেতাদের) কারণে আমরা মামলা দায়ের করতে পারিনি। পরবর্তী সময়ে মামলা দায়ের করা হলে এজাহার হয়, সিএস আসছে, আসামিরা সালেন্ডার করছে। পরে পর্যাপ্ত সাক্ষী প্রমাণ না পাওয়ায় ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট বিচারক আসামিদের খালাস দেন। আমি আজ সলিসিটার অনুমতি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউর হিসেবে মামলাটির আপিল দায়ের করি।

তিনি আরও বলেন, সঠিক বিচার পদ্ধতির মধ্যে এজাহারকারীকে সাক্ষী নেওয়া হয়নি, জখমি যারা ছিল তাদের সাক্ষী নেওয়া হয়নি এবং মূল তদন্তকারী কর্মকর্তাকেও সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত করা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
এমএস/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।