মেহেরপুর: র্যাবের করা মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নাজমুল হুদা (৪২) আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে নাজমুল হুদা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাস তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত নাজমুল হুদা গাংনী উপজেলার ভরাট গ্রামের নাকার আলীর ছেলে।
চলতি মাসের ১৩ তারিখে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাস তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সে সময় নাজমুল হুদা পলাতক ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৮ নভেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৬ গাংনী ক্যাম্পের একটি দল গাংনী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামে অভিযান চালিয়ে নাজমুল হুদা ও তেরাইল গ্রামের সুন্নত আলীর ছেলে মনিরুল ইসলামকে আটক করে। সে সময় তাদের কাছে থাকা হেলমেটের মধ্যে ৩৭ গ্রাম হেরোইন ও ১৮০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া যায়। এছাড়া মাদক বিক্রির কিছু টাকাও জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ক (১) টেবিলের ১ (খ) এবং ৭(ক) ধারায় একটি মামলা দায়ের করে। যার সেসন কেস নং ১১০/১৪ জিআর কেস নং ৭১৮/১৩ ইং। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। শুনানি শেষে অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় নাজমুল হুদাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, নাজমুল হুদা নিজেকে পত্রিকার সম্পাদক বা সাংবাদিক, কখনো রাজনীতিবিদ আবার কখনো ক্যাডার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন। তার বিরুদ্ধে মাদক, বিস্ফোরক, চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, মারামারি, ও আগ্নেয়াস্ত্র আইনে ডজন খানেক মামলা রয়েছে।
এলাকাবাসী আরও জানান, নাজমুল হুদা কোনোদিন স্কুলে না গেলেও নিজেকে উচ্চ শিক্ষিত দাবি করে এলাকায় একজন বড় রাজনীতিবিদ বনে গিয়েছিলেন। একটি বিশাল মাদক চক্র গড়ে তুলে ভারত থেকে বিভিন্ন মাদক এনে এলাকায় মজুদ করে কুষ্টিয়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাচার করতেন। তিনি একাধিকবার গাঁজা ও ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক নিয়ে র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১
এসআই