যশোর: যশোর আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের ছাত্র রাকিবুল ইসলামকে হত্যা করা হয়নি। মাথা ঘুরে ইটের ওপর পড়ে আঘাতজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) মামলার তদন্ত শেষে উপ পরিদর্শক (এসআই) আনছারুল হক তদন্ত রিপোর্টে এমন তথ্য দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। নিহত রাকিবুল নড়াইল লোহাগাড়ার চর কালনা গ্রামের প্রবাসী আনিসুর রহমান মনা মিয়ার ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, রাকিবুল ইসলাম যশোর আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের মার্কেটিং বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি শহরের খড়কি কারবালা পুকুরপাড়ের মাইনুর রহমান মিলনের মিলন তাহানান ছাত্রাবাসের চারতলায় অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গে থাকতেন। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি সকাল ১১টার দিকে ছাত্রবাস থেকে রাজু ফোন করে রাকিবুলের গ্রামের এক চাচা আব্দুল জলিল মোল্যার মোবাইল ফোন করে তার অসুস্থ ও তাকে হাপাতালে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান। এ সংবাদ পেয়ে রাকিবুলের মা কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে দুপুরে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছান। অসুস্থ রাকিবুলকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে খুঁজে না পেয়ে মর্গে যেয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা। এ সময় হাসপাতালে ছাত্রাবাসের কোনো ছাত্র ও মালিক কাউকে পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের জরুরিবিভাগ থেকে রাকিবুরের মৃত্যুর সনদপত্র সংগ্রহ করে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায়। রাতে মরদেহের গোসল করার সময় মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন দেখে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশকে সংবাদ দেওয়া হয়। পরদিন লোহাগাড়া থানার পুলিশ এসে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়।
এ ব্যাপারে ৩০ জানুয়ারি নিহতের মা লোহাগাড়া এ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করার পরামর্শ দেয়। ৩১ জানুয়ারি তিনি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগে দিলে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৬ ফেব্রুয়ারি নিহত রাকিবুলের মা রুপালী বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন। অভিযোগের ভেতর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্রাবাসের পরিচালক, রাধুনি ও চারতলায় বসবাসকারী ছাত্র সাজ্জাদ, নুরুল আহাদ, নুর আলম, রিয়াদ, কামরুল আলম ও রাজুসহ অপরিচিত আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
আদালতের বিচারক অভিযোগটি গ্রহণ করে কোতোয়ালি থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দিয়েছিলেন। আদালতে আদেশে ২৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগটি কোতোয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়।
এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে এজাহারে উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। একইসঙ্গে ঘটনার দিনে সকাল ১১টায় রাকিবুল মাথা ঘুরে ইটের ওপর পড়ে আঘাতজনিত কারণে অথবা শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হওয়ায় আদালতে এ চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
এএটি