ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডারচাপায় প্রাইভেট কারের পাঁচ আরোহীর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার ক্রেনচালক, হেলপারসহ তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একইদিনে চার আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামিরা হলেন- ক্রেনচালক আল-আমিন, তার সহকারী (যিনি ক্রেন চালাচ্ছিলেন) রাকিব ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার মো. জুলফিকার আলী শাহ।
আর জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন- প্রকল্পের ভারি যন্ত্রপাতি সরবরাহের ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়া প্রতিষ্ঠান ইফসকনের স্বত্বাধিকারী মো. ইফতেখার হোসেন ও হেড অব অপারেশন্স আজহারুল ইসলাম মিঠু, থার্ড পার্টি হিসেবে ক্রেন সরবরাহ করা বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের মার্কেটিং ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তুষার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন মৃধা।
এদিন রিমান্ড শেষে ৮ আসামিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসীন গাজী। এ সময় ৫ আসামিকে কারাগারে আটক ও তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী আসামি আল-আমিন ও রাকিবের এবং অপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন আসামি জুলফিকার আলীর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
অপর চার আসামির পক্ষে জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শুভ্রা চক্রবর্তী। আসামি মঞ্জুরুল ইসলামের পক্ষে জামিন আবেদন না থাকায় তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন একই আদালত।
এ মামলায় গত ১৭ আগস্ট রাতে ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাট থেকে মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ১৯ আগস্ট আল-আমিন, রাকিব ও জুলফিকারের তিনদিন ও বাকি সাতজনের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
সেই ১০ আসামির মধ্যে দুর্ঘটনার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিসের ট্রাফিক ম্যান রুবেল ও মো. আফরোজ মিয়া রোববার (২২ আগস্ট) স্বীকারোক্তি দেন। এরপর বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান।
ঢাকার সিএমএম আদালতে উত্তরা পশ্চিম থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ১৫ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর উত্তরার জসিমউদ্দীন রোডে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার সরানোর সময় তা ক্রেন থেকে ছিটকে পড়ে প্রাইভেট কারে থাকা শিশুসহ পাঁচ যাত্রী নিহত হন। তারা হলেন- মো. রুবেল (৫০), ঝর্ণা (২৮), জান্নাত (৬), জাকিয়া (২) ও ফাইজ।
ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ওই গাড়িতে থাকা নববিবাহিত দম্পতি হৃদয় ও রিয়া। সেদিন রাতেই নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্ণা আক্তারের ভাই আফরান মণ্ডল বাবু উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন। অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটায় ক্রেনের চালক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের মামলায় আসামি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
কেআই/আরবি