ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে কংক্রিট ব্লক প্রকল্প

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২২
পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে কংক্রিট ব্লক প্রকল্প

নীলফামারী: পরিবেশ রক্ষা ও সাশ্রয়ী মূল্যে অবকাঠামো নির্মাণে ইটভাটার বদলে কংক্রিট ব্লক নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে নীলফামারীর সৈয়দপুরের অদূরে সৈয়দপুর শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুম আহমেদ সিমেন্ট বালু, নুড়ি পাথরের সংমিশ্রণে ইট তৈরির ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছেন।

কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ও এলাকায় এসব ব্লক কিনতে আগ্রহ না থাকায় প্রকল্পটি প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে।  

মাসুম আহমেদ জানান, বিশাল অংকের টাকা দিয়ে নির্মিত ইটভাটা ফেলে রেখে নতুন করে অর্থলগ্নির মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব কনক্রিট ব্লক প্রকল্প করেছি। সৈয়দপুরের অদূরে তারাগঞ্জের খিয়ারজুম্মা শেরমস্ত এলাকায় নিজ ইটভাটার পাশেই এমআরবি নামে এই কারখানা স্থাপন করেছি।  

তিনি বলেন, মূলত, পরিবেশের দূষণ রোধ ও কৃষি জমির মাটির উর্বরতা রক্ষায় সরকারের উদ্যোগে সহযোগিতা করতেই এই পদক্ষেপ। কিন্তু যাদের নির্দেশনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছি বিপণনে তাদের কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই। এ কারণে দুই বছর ধরে লোকসান গুনতে হচ্ছে। কেননা আমার কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার পিস কনক্রিট ইট তৈরি করা যায়। কিন্তু তা করা সম্ভব হচ্ছে না।

দৈনিক বিক্রয় হয় মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ পিস। তাই সক্ষমতা অনুযায়ী ইট তৈরি করলে উৎপাদিত মাল মাসের পর মাস পড়ে থাকছে। এতে পুঁজি আটকে যাচ্ছে। এ কারণে উৎপাদন কমিয়ে দিতে হয়েছে। কিন্তু ৫ থেকে ৭ জন শ্রমিককে নিয়মিত পুরো মজুরিই দিতে হচ্ছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি। বিনিময়কৃত অর্থ উঠে না আসায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি কোম্পানিগুলো এদেশে বাস্তবায়নকৃত নির্মাণ প্রকল্পে ব্লক ব্যবহার করলেও সরকারি বিভিন্ন আবাসন, আশ্রয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণসহ কোনো প্রকল্পেই নিজেদের নির্দেশনা কার্যকর করা হচ্ছে না। অথচ সরকার যদি এক্ষেত্রে একটু সচেষ্ট হয় তাহলে আমরা যেমন উপকৃত হব, তেমনি কর্মসংস্থানও হবে। সেই সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার জন্য কার্যকর সফলতাও আসবে।

এই উদ্যোক্তা বলেন, এজন্য আপাতত শুধু সরকারি প্রকল্পগুলোতেই কনক্রিট ব্লক ব্যবহার নিশ্চিত করলেই সৃষ্ট অচলাবস্থা দূর হবে। এভাবে সরকারি কার্যক্রমের ফলে সাধারণ মানুষের মাঝেও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে। তাছাড়া মাটির ইটের পরিবর্তে ব্লক ব্যবহারে গ্রাহকও লাভবান হবেন। কেননা ইটের চেয়ে ব্লক মূল্য সাশ্রয়ী, মানসম্পন্ন ও দীর্ঘস্থায়ী।

সূত্র মতে, সরকারের ধারাবাহিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এক সময় এই খাতটি লাভজনক হিসেবে দাঁড়াতে পারবে। নয়তো ফসলি জমির মাটি কেটে উর্বরা শক্তি নষ্টের সঙ্গে ভাটার ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ চলতেই থাকবে। যা কোনোভাবেই আমাদের দেশের জন্য শুভকর হবে না। তাই এ ব্যাপারে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।