ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ পৌষ ১৪৩১, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নগরকান্দা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১২ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৩
নগরকান্দা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া

ঢাকা: ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া। গত ৬ মে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই করা চিঠিতে জামাল হোসেন মিয়াকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জামাল হোসেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বেলায়েত হোসেন মিয়া সরকারি চাকরিতে যোগদান করার কারণে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক এই শূন্য পদে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়াকে পরবর্তী সম্মেলনের পূর্ব পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব দেওয়া হলো।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জামাল হোসেন মিয়াকে এ দায়িত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত আরও বেশি জোরালো, মজবুত এবং বেগবান হবে।  

এক প্রতিক্রিয়ায় জামাল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও শান্তির বার্তা জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি। মূলত আমি নগরকান্দা-সালথার জনগণের ইচ্ছায় রাজনীতি করি। তাদের ভালোবাসা ও সমর্থন আমাকে এই পর্যন্ত এনেছে। আমি বরাবরই জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করি এবং করতে চাই। জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন, আমার রাজনীতির একমাত্র শক্তি। ’ 

এদিকে, জামাল হোসেন মিয়াকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করায় ফরিদপুর-২ আসনের দলীয় নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছেন জামাল হোসেন মিয়া। নেতাকর্মীরা বলছেন, তাকে এ গুরুদায়িত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে নগরকান্দা তথা সমগ্র ফরিদপুর-২ আসনে দলীয় কার্যক্রম গতিশীল হবে।  

জানা গেছে, জামাল হোসেন মিয়া ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতি করেছেন। রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সংসদের জিএস ছিলেন। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তিনি বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।  

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স অব সোশ্যাল সায়েন্স অর্জন করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এবং জারিন কনস্ট্রাকশনের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত। এ ছাড়া তিনি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের পরিচালক, ফরিদপুর জেলা শেখ জামাল ক্রীড়া চক্রের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সদস্য, ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সদস্য, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্যসহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

রক্তে যার আওয়ামী ধারা : পিতা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সহিদ মিয়া মুক্তিযুদ্ধকালীন নগরকান্দা উপজেলার কমান্ডার ছিলেন। এ ছাড়া তিনি নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, তালমা ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নগরকান্দা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।  

জামাল হোসেনের মা দেলোয়ারা বেগমও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তার ভাই কামাল হোসেন মিয়া। বোন রিক্তা আক্তার নগরকান্দা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।  

আওয়ামী পরিবারে বেড়ে ওঠা জামাল হোসেন এখনও আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের বার্তা নিয়ে ছুটছেন উপজেলার শহর থেকে গ্রামে। শুধু রাজনীতিতেই নয়, সামাজিক কাজেও উপজেলাব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। দেশের নানা ক্রান্তিকালে মানবিক সেবা দিয়ে তিনি ইতোমধ্যে নগরকান্দা-সালথার গণমানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রতিনিয়তই।

মানুষের পাশে সবসময় : শুধু রাজনীতির ভেতরেই সীমাবদ্ধ নন জামাল হোসেন মিয়া। একজন মানবিক সহানুভূতিশীল মানুষ হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার। বিশেষ করে করোনার প্রকোপে যখন জনজীবন স্থবির হয়ে গিয়েছিল তখন প্রায় ১১ হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন তিনি। করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়াও প্রতিবছর রমজানে প্রায় দুই হাজার পরিবারের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় তিন হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও পাঁচ হাজার অসহায় পরিবারের মাঝে নতুন কাপড় বিতরণ করেন তিনি।

এছাড়াও এলাকার পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই, খাতা, কলমসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ প্রদান করেন। শীতে অসহায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্রসহ এলাকার ভাঙা রাস্তা মেরামত ও সাঁকো-পুল এবং মাটির রাস্তা নির্মাণ করে এলাকায় ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন। এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় সরকারি বরাদ্দ ছাড়াই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ব্রিজ, কালভার্ট, বাঁশের সাঁকো, কাঁচা রাস্তা, মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণ, স্কুল নির্মাণ, গরিব অসহায় শিক্ষার্থীদের এককালীন নগদ অর্থ সহায়তা, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ছাড়াও দুই উপজেলাবাসীর জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করছেন তিনি। সামাজিক নানা উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই জড়িত রয়েছেন তিনি। উপজেলার অসহায় গৃহহীনদের কাঁচা-পাকা ঘর নির্মাণে অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন।

প্রত্যন্ত ইউনিয়নগুলোর মানুষের সুখে-দুঃখে তাদের পাশে এক কাতারে দাঁড়িয়ে রাস্তাঘাট উন্নয়ন, মাদক নিয়ন্ত্রণ, করোনাকালে কর্মহীনদের মধ্যে চাল, আলু বিতরণ, আগুনে পোড়া পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদান, অসুস্থ ব্যক্তিদের আর্থিক সাহায্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ নানাবিধ জনকল্যাণমূলক কাজ করে এলাকায় আলো ছড়াচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।