ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বকেয়া পরিশোধ না হলে রাজপথে শ্রমিকের রক্ত ঝরানোর হুমকি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৩
বকেয়া পরিশোধ না হলে রাজপথে শ্রমিকের রক্ত ঝরানোর হুমকি

খুলনা: খুলনার খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, চট্টগ্রামের কেএফডি, আর আর ও সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুট মিলের শ্রমিকদের সঠিক হিসাব অনুযায়ী সমুদয় বকেয়া পরিশোধ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু ও আধুনিকায়নের দাবিতে খুলনায় গেট সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বকেয়া পরিশোধ না হলে রাজপথে শ্রমিকরা তাদের রক্ত ঝরাবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন।

খুলনার খালিশপুর দৌলতপুর যৌথ কারখানা কমিটির উদ্যোগে খালিশপুর পিপলস গোল চত্বরে শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেলে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গেট সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খালিশপুর জুট মিল কারখানা কমিটির সভাপতি ও সিবিএর সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির হোসেন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাট ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, বিজেএমসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কনসালটেন্টদের সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের ফলাফলই ২৫টি পাটকলের লোকসানের প্রধান কারণ। লোকসানের জন্য এ দুর্নীতিবাজদের বিচারও হয়নি, তারা শাস্তিও পায়নি। অথচ লোকসানের দায়ভার বর্তেছে সাধারণ পাট শ্রমিকদের ওপর। একদিকে শাসকরা লোকসানের জন্য শ্রমিকদের দায়ী করে রেখেছে অন্যদিকে পাটকল বন্ধের ৩ বছর পূর্ণ হলেও ডেইলি বেসিস শ্রমিকদের কোনো টাকা দেননি। সঙ্গত কারণে অভুক্ত শ্রমিকরা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অসংখ্য শ্রমিকদের সন্তান লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। সংসার চালাতে গিয়ে অনেকে অনৈতিক পেশায় প্রবেশ করেছে। এমনকি অদক্ষ পেশায় যুক্ত হয়ে কেউ কেউ দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণও করেছে।

বক্তারা আরও বলেন, পাটশিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত। এ শিল্প দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশি বাজারে প্রসার ঘটাতে পারতো। অথচ সরকার দেশি-বিদেশি গোষ্ঠীর কায়েমি স্বার্থে পাটকল ও পাটশিল্পকে ধ্বংস করে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ লুট করার ব্যবস্থা করছে।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শ্রমিক নেতারা বলেন, সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। যেকোনো সময় এটি বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলো একদফা এক দাবির আন্দোলন করছে। শ্রমিকদেরও তাদের মতো একদফা এক দাবি রয়েছে। শ্রমিকদের একদফা এক দাবি হলো পাটকল চালু ও শ্রমিকদের সমস্ত বকেয়া পরিশোধ। বকেয়া দ্রুততার সঙ্গে পরিশোধ করা না হলে দুয়েক মাসের মধ্যে একদফা ও এক দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান যেন এ ধরনের আন্দোলন সর্বশক্তি দিয়ে গড়ে তুলতে না হয়।

বক্তারা অবিলম্বে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু, আধুনিকায়ন শ্রমিকদের সমুদয় বকেয়া বেতন এককালীন দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান অন্যথায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সমাবেশে এ সময় বক্তব্য দেন- পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সদস্য সচিব এস এ রশীদ, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় সদস্য মো. মোজাম্মেল হক খান, গণসংহতি আন্দোলনের ফুলতলা উপজেলা আহ্বায়ক মো. অলিয়ার রহমান শেখ, দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ, প্লাটিনাম জুটমিলের শ্রমিকনেতা মো. নূরুল ইসলাম, বদলি দৈনিকভিত্তিক আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক ইলিয়াস হোসেন, প্লাটিনাম জুটমিলের আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার, ক্রিসেন্ট জুটমিলের মোশারেফ হোসেন, জেজেআই জুট মিলের শামস শারফিন শ্যামন, শ্রমিকনেতা আবদুল কাদের, পান্নু সরদার, শফিউদ্দীন, আবদুল হাকিম, কাজী ডালিম, মিন্টু কাজী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৩
এমআরএম/এইচএমএস/আরবি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।