ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট সড়কে

কাজ না করেই সরকারি অর্থ লোপাট

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
কাজ না করেই সরকারি অর্থ লোপাট

সিলেট: পুকুর চুরি হয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) সিলেট জোন অফিসে। প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ না করেই বিল নিয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

আর যে কাজ হয়েছে, তাতেও হয়েছে বড় ধরনের অনিয়ম।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ২২ আগস্ট সিলেট জোন অফিস থেকে এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা নামে এক ব্যক্তির অনুকূলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট রাস্তার উন্নয়নকাজের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

এই কাজে সড়কের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন আইটেম ধরা আছে। গত এক বছর কাজ চলমান অবস্থায় অনিয়মের কোনো শেষ ছিল না। সড়কের কাজ করতে যেখানে বেইজমিক্স প্লান্ট বাধ্যতামূলক ছিল, বেশির ভাগ সময় সেখানে ড্রাম মিক্সড প্লান্ট ব্যবহার করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আইটেম প্রচ্ছন্নভাবে অসম্পূর্ণ রেখে এ বছরের ১৪ জুন সড়কের কাজের আইপিসি নম্বর ৪ ও চূড়ান্ত বিল অনুমোদন করা হয়।

এ কাজের বিপরীতে পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় গত ২২ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরাকে চূড়ান্ত বিলের ৬ কোটি টাকার মধ্যে আংশিক (১ কোটি ৫০ লাখ টাকা) পরিশোধ করেন সিলেট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী। অথচ দেখা গেছে, সড়কের কাজের কোনো কোনো অংশে বাইন্ডার কোর্স করে ওয়্যারিং কোর্স না করায় বাইন্ডার নষ্ট হয়ে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি, রাস্তার প্রশস্তকরণ অংশে বাইন্ডার করা হয়নি। শুধু বেইস টাইপ করে রাখা হয়েছে। প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিল নিয়ে গেছে।

খাগড়াছড়ির এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরার নামে মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট সড়কের কার্যাদেশ দেওয়া হলেও মূলত কাজটি বাস্তবায়ন করেন সিলেটের জয়দ্বীপ দে পার্থ ও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।

সূত্র জানায়, জয়দ্বীপ দে পার্থ সিলেট সড়ক সার্কেলের সদ্য বদলি হওয়া তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উৎপল সামন্তর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। উৎপল সামন্ত সিলেট সড়ক সার্কেলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কর্মকালীন বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসে। গণমাধ্যমে ‘উৎপল-পার্থ রসায়নে পথহারা সওজ’ ও ‘উৎপল-পার্থের হাতে জিম্মি সিলেটের সড়ক বিভাগ শিরোনামে’ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। যাতে তাদের দুই বন্ধুর সম্মিলিত নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি লুটপাটের বিশদ বর্ণনা প্রকাশিত হয়।

প্রকল্পের কাজ বাকি রেখে চূড়ান্ত বিল দেওয়ার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জয়দ্বীপ দে পার্থর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত সিলেট সড়ক সার্কেলে কর্মরত ছিলেন এবং তার সইয়ে বিলটি অনুমোদন হয়।

মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট সড়কের কাজে সংশ্লিষ্ট যারা, তাদের কারও মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কথা বলা যায়নি জয়দ্বীপ দে পার্থ ও প্রকৌশলী উৎপল সামন্তের সঙ্গেও।

এ ব্যাপারে সিলেট সড়ক বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্পের অর্থ ছাড়ের বিষয়টি সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল নই। প্রকল্প পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
এনইউ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।