ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ৯ দফা দাবি আদিবাসী পরিষদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ৯ দফা দাবি আদিবাসী পরিষদের

রাজশাহী: নয় দফা দাবি জানানোর মধ্য দিয়ে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) তিন দশক পূর্তি উৎসব উদযাপন করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।

নিজস্ব সংস্কৃতিতে নেচে-গেয়ে রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্রে এসে প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর উদযাপন করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।

কর্মসূচি থেকে সরকারের কাছে আবারও সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনসহ মোট নয় দফা দাবি জানান নেতারা।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সকাল ১১টায় রাজশাহীর গণকপাড়া এলাকা থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়।  

বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রা বিভিন্ন প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ, তরুণ ও ছাত্র-যুবকরা পৃথক মিছিল নিয়ে অংশ নেন।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা চলাকালীন শহরের বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব বাদ্যযন্ত্রের তালে-তালে নাচ-গানে মেতে ওঠেন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নারীরা। একরকম আনন্দ উল্লাসেই তারা উপভোগ করেন বিশেষ এই দিনটিকে।  

এ সময় তাদের ব্যতিক্রম মনোমুগ্ধকর নৃত্য দেখতে জড়ো হন শহরের উৎসুক জনতা।

শোভাযাত্রায় আদিবাসী ছাত্র ও যুবদের হাতে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতেও দেখা যায়। প্ল্যাকার্ডে লেখা- ‘সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন কর, করতে হবে, ভূমি অফিসের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে, উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে আদিবাসী কোটা ও বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে, মৃত ভেড়ার পরিবর্তে আদিবাসীদের পুনরায় ভেড়া দিতে হবে।

আদিবাসী পরিষদের শোভাযাত্রাটি ‘জয় বাংলা চত্বরে’ গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সেখানে একটি ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে আদিবাসী জনতার সামনে বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরেন আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।

এর আগে সমাবেশের উদ্বোধন ঘোষণা করেন আদিবাসী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত অনিল মারান্ডির সহধর্মিণী আগস্তিনা মুরমু। সভাপতিত্ব করেন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি আইনজীবী বাবুল রবি দাস।

সঞ্চালনা করেন পরিষদের কেন্দ্রীয় (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক গণেশ মার্ডি। এ সময় সমাবেশ থেকে বক্তারা সরকারের কাছে নিজেদের নয় দফা দাবি তুলে ধরেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে; তবু আদিবাসীরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সাংবিধানিক স্বীকৃতিটুকু জোটেনি; বরং দিনে-দিনে জমি হারিয়ে তারা ভূমিহীনে পরিণত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন সরকারের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে সমতলের আদিবাসীদের ভূমি কমিশন গঠনসহ জীবনমান উন্নয়ন, জানমালের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবায়নের তেমন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও কষ্টকর!

সমাবেশ থেকে আদিবাসী পরিষদের নেতারা আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান, সমতলের আদিবাসীদের জন্য স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ; সরকারি চাকরিতে কোটা নিশ্চিত এবং উচ্চশিক্ষায় কোটা বাস্তবায়নসহ আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, জমি জবরদখল, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি জানান।

এসময় বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য খ্রিস্ট্রিনা বিশ্বাস, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নওগাঁর আহ্বায়ক আমিন টুডু, সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়ার, নাটোরের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রদীপ লাকড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আহ্বায়ক বীরেন দেশলা, বগুড়ার সন্তোষ শিং, পাবনার সুশান্ত মুন্ডারি, রাজশাহীর মকুল বিশ্বাস প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।