ঢাকা: বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভর (বিআরআই) উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের এক নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় এগিয়ে নিতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) হোটেল রেডিসনে এক সেমিনার ও রিপোর্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ: অ্যাচিভমেন্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক সেমিনার ও রিপোর্ট উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকার চীনা দূতাবাস।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. দীপু মনি বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের এক নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় বৈঠক করেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও চীন সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে তুলে ধরেন।
বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ১০ম বার্ষিকীতে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে অভিনন্দন জানান।
ডা. দীপু মনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি ভবিষ্যতে আমাদের দুই দেশের নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ কাঠামোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীন নীতি, অবকাঠামো, বাণিজ্য, আর্থিক এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী সহযোগিতা করতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় এগিয়ে নিতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে।
সেমিনারে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ: ‘অ্যাচিভমেন্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
রিপোর্টে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ২০১৩ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রস্তাব করেছিলেন। ২০২৩ সাল ছিল বিআরআইর ১০ম বার্ষিকী। বিগত এক দশকে বিআরআই আলোচনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে ভাগাভাগি করে নেওয়ার বৈশিষ্ট্যের নীতি মেনে চলে। এই বছরের জুন পর্যন্ত, চীন ১৫২টি দেশ এবং ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার বিষয়ে ২শ’টিরও বেশি সহযোগিতা নথিতে সই করেছে, যা আরও বেশি সংখ্যক দেশকে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিতে সহায়তা করেছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ যারা বিআরআইতে যোগ দিয়েছে। বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি এটা দেখে আনন্দিত যে বিআরআই-এর অনুপ্রেরণায় চীনা উদ্যোক্তা ও জনগণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবেশগত উন্নতি এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বাংলাদেশ ২০১৬ সালে বিআরআইয়ে যোগদান করে। ২০১৬ সালে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২২ সালে ২৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ ২০১৬ সালে ২৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২২ সালে ১৩৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
রিপোর্ট বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, বিআরআই বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে কমপক্ষে ২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে, অতিরিক্ত ২ দশমিক ৫ থেকে শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং দারিদ্র্য ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমবে৷ আমি নিশ্চিত যে বিআরআইর অধীনে আরও বেশি সংখ্যক চীনা উদ্যোক্তা এবং জনগণ স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে আত্মনিয়োগ করবে৷ ‘ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়নে আরও বেশি অবদান রাখবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, বিডার নির্বাহী সদস্য খন্দকার আজিজুল ইসলাম, ইআরডির অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১ ২০২৩
টিআর/এএটি