ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বিচারপ্রার্থীদের সঠিক বিচারিক সেবা দিতে হবে: প্রধান বিচারপতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৩
বিচারপ্রার্থীদের সঠিক বিচারিক সেবা দিতে হবে: প্রধান বিচারপতি

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর প্রতি যদি সত্যিকারের শ্রদ্ধা নিবেন করতে হয়, তাহলে বিচারপ্রার্থী জনগণকে সঠিক বিচারিক সেবা করতে হবে।

শনিবার (৪ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী এবং জাতীয় সংবিধান দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিচারকদের উদ্দেশ্যে কথাটি বলেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

অনুষ্ঠানে তার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি উজ আহমেদ মুথাসিম আদনান। বিশেষে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। এ ছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকিরও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনি জনগণকে নিয়েও কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, তীব্র মানবিক সংকটে পৃথিবী আজ ভুগছে অবর্ণনীয় বিষাদে। আজকের সংবিধান দিবসের এই সুন্দর অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে কেবলই তাই উদ্বুদ্ধ হচ্ছি অজানায় আশংকায়, দগ্ধ হচ্ছি শোকের অনলে। এ বিশ্ব হারিয়েছে যাদের, তারা হয়তো কেউই চেনেন না আমাদের। তারপরও তারা আমাদের ভাই-বোন, আমাদের স্বজন। শিশুরা লাশ হয়ে আছে বাবার বাহুতে বা মায়ের কোলে। পৃথিবীর কোথাও একটি রাষ্ট্র নেই তাদের।

ওবায়দুল হাসান বলেন, আমরা মাতৃভাষা, রাষ্ট্র ও সংবিধান পেয়েছি ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে। কিন্তু পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যারা প্রতিনিয়ত আশা করছে শান্তির, আশা করছে ভালোবাসার। ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের মানবিক বিপর্যয়ের আশু সমাধানের দাবি জানানোর পাশাপাশি বিশ্বের যে সকল অঞ্চলে মানবিক সংকট রয়েছে তার সমাধানের আশা প্রকাশ করছি।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সংবিধান গৃহীত হওয়ার দিন ৪ নভেম্বরকে সংবিধান দিবস হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় উৎযাপন করি ২০২২ সালে। সরকার এই দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। আজকে এই দিবসটি সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো পালিত হয়েছে। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ সম্পর্কে কথা বলেন তিনি। বলেন, প্রতিদিন বিচারকের আসন গ্রহণকালে আমার এবং আমার প্রত্যেক সহকর্মীর হৃদয় আপ্লুত হয় বঙ্গবন্ধুর স্মরণে। এই বিচার প্রার্থীদের জন্যই বঙ্গবন্ধু নিজ তারুণ্য উৎসর্গ করেছেন, প্রয়োজন ত্যাগ করেছেন, অকাতরে জীবন দিয়েছেন।

বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি যদি সত্যিকারের শ্রদ্ধা নিবেন করতে হয়, তাহলে এই বিচারপ্রার্থী জনগণকে সঠিক বিচারিক সেবা করতে হবে। তাদের মুখের দিকে তাকালে দেখতে পারবেন, সেখানে ফুটে উঠেছে রাজ্যের আশঙ্কা রেখা। সেই শঙ্কাগুলোকে পরম যত্নে দূর করে দিন। এদের জন্যই বঙ্গবন্ধু ছুটে বেরিয়েছেন বাংলার প্রত্যন্তগ্রামে। এই মানুষগুলো যদি ন্যায় বিচারের সুবাতাসে তৃপ্ত হতে পারে তবেই এ মাটির সন্তান হিসেবে প্রকৃত সফলতা পাব।

মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি উজ. আহমেদ মুতাসিম আদনান প্রধান অতিথির বক্তব্যে তার দেশের সংবিধান রচনার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও এর বৈশিষ্ট্য  তুলে ধরেন। এরপর বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের ভৌগোলিক অবস্থান উল্লেখ করে তিনি এই অঞ্চলের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব উল্লেখ করার পাশাপাশি এর প্রভাব মোকাবেলা ও ব্লু ইকোনমি উন্নয়নে দুই দেশের সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

তিনি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মালদ্বীপ সফর এবং সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একজন ডাইনামিক পারসোনালিটি। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি মালদ্বীপের স্বাস্থ্যখাত, উচ্চশিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়নে এবং সামরিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবদানের কথা স্বীকার করেন।

অনুষ্ঠানে সংবিধান অলংকরণের জন্য প্রধান শিল্পী হাশেম খান ও আবুল বারক আলভীকে সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন প্রধান বিচারপতি।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৩
ইএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।