ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আন্দোলন দ্রুত দমন করে স্বাভাবিক পরিবেশ আনতে চায় সরকার

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২৩
আন্দোলন দ্রুত দমন করে স্বাভাবিক পরিবেশ আনতে চায় সরকার

ঢাকা: দেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আগাচ্ছে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, বিএনপির আন্দোলন ও অবরোধকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পদক্ষেপ দ্রুতই বাস্তবায়ন করবে সরকার। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহিংসতা ও নাশকতার সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তাদের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বা নির্দেশ দিচ্ছেন ওই নেতাদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। নির্দেশ দাতাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ ও সরকারের নির্ধারকরা।

এ বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিএনপির দ্বিতীয়, তৃতীয় পর্যায়ের নেতাদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে কর্মীরা যাতে মাঠে সহিংসতা চালাতে না পারে সে পদক্ষেপ হিসেবেই তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে এসব পর্যায়ের নেতাদেরও আটক করে আইনের আওতায় আনা হতে পারে বলেও ওই সূত্রগুলো জানায়।

ইতোমধ্যে বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির প্রথম সারির কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই পর্যায়ের অন্য নেতারাও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছেন এবং দ্রুতই আটক হয়ে যেতে পারেন।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা আগে যেকোনো পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার। এর জন্য প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক এ দুই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েই অগ্রসর হচ্ছে সরকার ও আওয়ামী লীগ। অবরোধ বা অন্য কোনো উপায়ে বিএনপি ও দলটির সহযোগীদের সহিংসতা চালানোর চেষ্টা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও মাঠের অবস্থান অব্যাহত রাখবে এবং আরও কঠোর হবে।

শনিবার মতিঝিলে আওয়ামী লীগের সমাবেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য এটা স্পষ্ট হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যারা হুকুম দাতা, দেশেই থাকুক, বিদেশেই থাকুক, হুকুমদারি করে বিদেশ থেকে ধরে এনে ওই কুলাঙ্গারকে এই বাংলাদেশে শাস্তি দেব, কেউ ছাড়া পাবে না। অগ্নি সন্ত্রাস, মানুষ খুন করা আর সব কিছু ধ্বংস করা, তাদের কে অধিকার দিয়েছে? এটা কিভাবে বন্ধ করাতে হয় সেটাও আমাদের জানা আছে। আমরা ছাড়ব না।

এদিকে রোববার থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার ডাকা অবরোধ শুরু হচ্ছে। এরপর এক দিন বিরতি দিয়ে পুনরায় অবরোধ ঘোষণা করতে পারে। আবার আগামী সপ্তাহ থেকে টানা অবরোধ বা অসহযোগ কর্মসূচি দিতে পারে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।

সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই সূত্রগুলো থেকে আরও জানা যায়, নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি আরও বড় ধরনের সহিংসতা ও নাশকতায় যেতে পারে। আর তফসিল ঘোষণার আগেই দলটির এসব ঘটনা ঘটানোর টার্গেট রয়েছে বলে সরকারের কাছে এ ধরনের তথ্য আছে। পরিস্থিতি যাতে আরও জটিল পর্যায়ে নিয়ে যেতে না পারে সে জন্যই সরকার সর্বোচ্চ কঠোর পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়ে আগাচ্ছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দ্রুত বিএনপির আন্দোলন স্থগিত হয়ে যাবে। যদিও তাদের এটা কোনো আন্দোলন না। সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাস করে কতদিন চালাবে? আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যেভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে, আমরাও মাঠে থাকব, আমি নিশ্চিত কয়েক দিনের মধ্যে তাদের আন্দোলন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২৩
এসকে/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।