যশোর: যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই দল কয়েদির মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে চার-পাঁচজন কয়েদি আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) কারাগারের নিউ জেল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হুইসেল বাজিয়ে কারারক্ষীরা ভেতরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা কারা উপমহাপরিদর্শক অসীম কান্তি পাল। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে সূত্র জানিয়েছে।
দুই গ্রুপের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। তবে, কারাগারের একটি সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে অসংখ্য দর্শনার্থী অপেক্ষায় ছিলেন। হঠাৎ হুইসেল বেজে ওঠে। মুহূর্তেই মানুষ দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। দর্শনার্থীদের দ্রুত বাইরে বের করে দেওয়া হয়।
এ সময় কারারক্ষীরা তাড়াহুড়ো করে লাঠি নিয়ে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। এতে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি সৃষ্টি। কেউ কেউ বলতে থাকেন, আসামি পালিয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
কারাগারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কারাগারের ভেতরে নিউ জেল এলাকার সামনে সন্ত্রাসী ভাইপো রাকিব ও আরেক সন্ত্রাসী সম্রাটের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। শেষমেশ তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দুজন কারারক্ষী জখম হন। তাদের কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত হাজতিদেরও সেখানে চিকৎসা দেওয়া হয়েছে।
তাৎক্ষণিক কারা কর্তৃপক্ষ সংঘর্ষে জড়িত সাত-আটজনকে চিহ্নিত করেছে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে পৃথক স্থানে রাখা হয়েছে। তাদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সূত্র দাবি করেছে, কারাগারে মোবাইল ফোনে কথা বলা নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত।
এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুজন কারারক্ষীসহ সাতজন হাজতিকে কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি সামান্য। তবে, আকস্মিকভাবে তাদের একজন কারারক্ষী অ্যালার্ট হুইসেল বাজিয়ে ফেলেন। এতে করে বিষয়টি বড় আকারে রূপ নেয়।
তিনি বলেন, মূলত যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে শহরের দাগী কয়েকজন সন্ত্রাসী রয়েছে। এদের দুটি গ্রুপের সদস্যদের বাইরেই কোন্দল ছিল, যা কারাগারের ভেতরে ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা করেছে। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
আহত কারারক্ষীদের ওপর হামলা হয়নি। তাড়াহুড়ো করে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে দুজন আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানান সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
ইউজি/এমজেএফ
