ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তাপদাহে বিপর্যস্ত রিকশা চালকরা, কমেছে আয়ও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
তাপদাহে বিপর্যস্ত রিকশা চালকরা, কমেছে আয়ও

ঢাকা: রাজধানীর সোবহানবাগ মসজিদের বিপরীত পাশে যাত্রীর অপেক্ষা করছিলেন রিকশা চালক মো. উজির আলী। দুপুরের তপ্ত রোদ এসে পড়ছিল প্রধান সড়কে।

আশপাশে কোনো গাছ না থাকায় রোদের হাত থেকে বাঁচতে নিজের রিকশা ছায়ায় রাস্তার ওপরই বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তিনি।

তাপদাহের এই তীব্র গরমে ছায়ায় না দাঁড়িয়ে রোদের মধ্যে দাঁড়ানোর কারণ জানতে চাইলে উজির আলী বলেন, যেসব জায়গায় গাছ বা বিল্ডিংয়ের ছায়া আছে, সেসব জায়গায় দাঁড়ালে যাত্রী পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়েই এই রোদের মধ্যে দাঁড়াতে হয়েছে।

রাজধানীসহ সারাদেশে বইছে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা প্রাণিকুলে। তবে তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন উজির আলীর মতো রিকশাচালকরা। চাইলেই গরমে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ নেই তাদের। জীবিকার তাগিদে এই তীব্র গরমের মধ্যেও কষ্ট করতে হচ্ছে এরপরও গরমের কারণে কমেছে তাদের আয়ও।

উজির আলী বাংলানিউজকে বলেন, গরমে চরম কষ্ট হয়। কিন্তু কিছু করার নেই। বাড়িতে পরিবার আছে, তাদের টাকা পাঠাতে হয়। ঢাকায় নিজের খরচ। সব মিলিয়ে রিকশা না চালালে নিজের ও পরিবারের পেটে ভাত জোটে না। তাই বাধ্য হয়েই এই গরমের মধ্যে রিকশা চালাতে হচ্ছে।

আগের তুলনায় আয় কমেছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, গরমের কারণে একটানা রিকশা চালানো যায় না। প্রতিবার যাত্রী বহন করলে, বিশ্রাম নিতে হয়৷ বেশিক্ষণ চালানো যায় না। এছাড়া গরমের কারণে রাস্তায় যাত্রীও কম।

একই কথা বলেন মো. সুজন নামের এক রিকশা চালক। দুপুরের তপ্ত রোদে ধানমন্ডি-৬ থেকে যাত্রী নিয়ে ধানমন্ডি-৩২ এ এসেছেন তিনি। গরমে ঘেমে-নেয়ে একাকার অবস্থা। তার মধ্যেও আবার যাত্রী খুঁজছেন তিনি। সুজন বলেন, আমাদের কামাইয়ের যে জোর, বসে থাকার তো সুযোগ নেই। বসে থাকলে খাব কি বাড়িতে বউ-বাচ্চা আছে। তাও তো ইনকাম নেই। কিছুক্ষণ রিকশা চালালে পায়ে জোর পাওয়া যায় না।  

দিল মোহাম্মদ নামের আরেক রিকশাচালক বলেন, গরমে বেশিক্ষণ রিকশা চালানো যায় না। তার ওপর স্কুলকলেজ বন্ধ থাকায় যাত্রী কম। একটি ক্ষেপ মারলে আধা ঘণ্টা বসে থাকতে হয়৷ আগে রিকশা জমা, খাবার খরচ বাদ দিয়ে দৈনিক ৬০০-৭০০ টাকা থাকতো। কিন্তু এখন ৩০০-৪০০ টাকা রাখতেও কষ্ট হয়ে যায়। গরমে কেউ কেউ বাড়তি টাকা দিলেও, বেশিরভাগ যাত্রী দেয় না৷ উল্টো একটু বেশি টাকা চাইলেই ঝগড়া লেগে যায়।

সাইন্সল্যাব এলাকায় যাত্রীর অপেক্ষায় বসে ছিলেন মো. জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, গরমে রিকশা চালাতে অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু পেটের দায়ে বের না হয়ে উপায় নেই। দুপুরে রিকশা কম থাকে, তাই এই সময় বের হয়েছি। এছাড়া এই গরমে টিনের গ্যারেজে শুয়ে থাকাও দায়। তার থেকে বাইরে থাকলে যাত্রীও পাওয়া যাবে, মাঝে মাঝে গাছের নিচে বিশ্রামও নেওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
এসসি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।