ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করায় সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত পাঠানো প্রবাসীরা পুনর্বাসনসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সৌদি আরব রিয়াদ ফেরত প্রবাসীদের’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এসব দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশের প্রতি ভিন্ন রকম আবেগ-অনুভূতি নিয়ে সেখানে বাস করেন। দেশের যেকোনো সংকটে প্রবাসীদের উদ্বেগ থাকে বেশি। বিগত জুলাই মাসে সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর স্বৈরাচারের চরম দমন-নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ দেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা রেমিট্যান্স শাটডাউন কর্মসূচির পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করেন। এতে সৌদী আরব ও আরব আমিরাতের প্রবাসীরা সেসব দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রোষানলে পড়েন। পাশাপাশি স্বৈরাচারী সরকারের তরফ থেকেও তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করা হয়। ফলে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী সেদেশে মামলা ও নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হন। প্রবাসীদের ধরে ধরে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। পলাতক স্বৈরাচারের অসহযোগিতার কারণে এসব প্রবাসীদের অনেককেই সেখানে জেল খাটতে হয়েছে। অনেককে জেল থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তারা আরো অভিযোগ করেন, গত ১৯ জুলাই সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করায় ২২৮ জন বাংলাদেশি প্রবাসীকে সেদেশের কর্তৃপক্ষ কারাগারে পাঠায়। সেখানে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও জুলুমও চালানো হয় আমাদের ওপর।
৪১ দিন জেল খাটার পর তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তারা আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে আরব আমিরাতের প্রবাসীদের সমস্যা কিছুটা লাঘব হলেও সৌদি ফেরত ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের উদ্ধার বা তাদের সহযোগিতায় কোনো পদক্ষেপ এখনো দৃশ্যমান নয়৷
প্রবাসীদের সমস্যা সমাধান ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পুনর্বাসনসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো-
১। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করার কারণে সৌদি সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মামলা ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করানো।
২। সৌদি ফেরত প্রবাসীদেরকে সরকারি খরচে সেদেশে অথবা অন্য দেশে পাঠানোর বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৩। দেশে ফেরত আসায় হঠাৎ বেকার হয়ে পড়া প্রবাসীদেরকে এককালীন নগদ সহায়তা দানের ব্যবস্থা নেওয়া।
৪। ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না করা পর্যন্ত দেশে কর্মসংস্থানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৫। সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোতে প্রবাসী বান্ধব কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া।
এ সময় সৌদি ফেরত মো. নিশাত, আনোয়ার হোসেন, মো. ফারুক হোসেনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪
এসসি/এসআইএস