ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেট আদালতের নতুন পিপি আশিক উদ্দিন, বাদ ফয়েজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২৪
সিলেট আদালতের নতুন পিপি আশিক উদ্দিন, বাদ ফয়েজ

সিলেট: মাত্র ১৫ দিনের মাথায় বাদ পড়লেন সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নিয়োগপ্রাপ্ত আইন কর্মকর্তা (পিপি) অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ উদ্দিন। তার স্থলে বিএনপি নেতা সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিনকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ উদ্দিনের নিয়োগ গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাতিল করে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এরপর একই পদে অ্যাডভোকেট মো. আশিক উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

অ্যাডভোকেট মো. আশিক উদ্দিন নিজে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে সবে তাজা প্রাণ ঝরেছে। যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন। তাদের রক্তে রঞ্জিত নতুন বাংলাদেশে মানুষের সেবা করে শহীদদের ঋণ পরিশোধ করতে চাই, বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।  

অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সিলেট নারী নির্যাতন আদালতে পিপি’র দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি সিলেট এডিএম কোর্টের অ্যাডিশনাল পিপি ছিলেন।  

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগে সিলেটে বিভিন্ন অঙ্গনে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মগোপনে রয়েছেন। সিলেট আদালতে আওয়ামী লীগের পিপি ছিলেন অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন। সরকার পতনের পর তিনিও অনুপস্থিত ছিলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বাধীন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় আগের আইন কর্মকর্তাদের বাতিল করে।  

গত ১৬ অক্টোবর নতুন করে সিলেটের সব আদালতে ১০৩ জন পাবলিক প্রসিকিউটর, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দেয় আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।  

এর মধ্যে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি করা হয় এটিএম ফয়েজ উদ্দিনকে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিবকে স্পেশাল পিপি করা হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে এবং তাদের অপসারণ দাবি করে। এ নিয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবীরা বিক্ষোভ করে এ দুই পিপির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।  

বিক্ষোভকারীদের দাবি অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ বহুরুপী ও বিতর্কিত ব্যক্তি। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে বিএনপিতে এসেছিলেন। বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দীর্ঘ আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। দলে তার সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা, অনুপস্থিতি ও দলীয় নেতাকর্মীদের আইনি সেবা প্রদানে তার বিতর্কিত ভূমিকার কারণে এক সময় আইনজীবী ফোরামের সভাপতির পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্র্যান্ট হয়ে সপরিবারে স্থায়ীভাবে আমেরিকায় পাড়ি জমান।  

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে তিনি পিপি হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। ওপর মহলকে ভুল বুঝিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটি বাগিয়ে নিলেও অবশেষে আইনজীবীদের আন্দোলনের মুখে এ টি এম ফয়েজের নিয়োগ বাতিল করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২৪
এনইউ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।