রাজশাহী: রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনে নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়েছেন নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক (ডিসি) আফিয়া আখতার।
রোববার (৩ নভেম্বর) দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমদিনই তিনি রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত দুই শিক্ষার্থীর বাড়িতে যান।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মো. মহিনুল হাসান ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে রাজশাহীর নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক (ডিসি) আফিয়া আখতার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতরা দেশের সম্পদ ও গর্ব, তারা শহীদের মর্যাদা পাবেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হলো বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। এ আন্দোলনে আহত-নিহতরা দেশের সম্পদ ও গর্ব, তারা শহীদের মর্যাদা পাবেন। তাদের রক্তের বিনিময়েই নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের সার্বিক প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন সর্বদা পাশে আছে ও সব সময় যেকোনো প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াবে। সেই জন্যই দায়িত্ব গ্রহণের পরই আমি এ শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কাজকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আজকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাকিব আনজুম ও মিনারুল ইসলামের পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়েছি। ভবিষ্যতে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ জেলার ছাত্র আন্দোলনে আহত-নিহতদের খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি সব ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হবে।
সাক্ষাৎকালে নিহত সাকিব আনজুমের বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। তিনি জানান, আজকে নবাগত জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। দায়িত্ব গ্ৰহণের পরেই তিনি সর্বপ্রথম কাজ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। এর ফলে তিনি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা এ রকম একটা জেলা প্রশাসক রাজশাহীর জন্য আশা করেছিলাম। তিনি নবাগত জেলা প্রশাসকের কাছে ভবিষ্যতে সব আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মতবিনিময় করারও আহ্বান জানান।
সাকিব আনজুম'র স্ত্রী নিশাত তাবাসসুম জানান, এত অল্প বয়সে স্বামীকে হারাতে হবে তা তিনি কখনো কল্পনাও করেননি। তার স্বামীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। এ সময় তিনি এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
আর জেলা প্রশাসক তাদের খোঁজ-খবর নিতে আসায় তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এছাড়া সাক্ষাৎকালে ছাত্র-আন্দোলনে নিহত মিনারুলের মা ডলি খাতুন অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, তিন ছেলে এক মেয়ের মধ্যে মিনারুলউ ছিল সবার ছোট। ইউসেফ স্কুল থেকে চাকরি পেয়ে, ১২ বছর ঢাকার নারায়ণগঞ্জ এলাকার ইপিজেডের বেঙ্গল কোম্পানির সিনিয়র অপারেটর হিসেবে কাজও করেছে। তার কলিজার টুকরো সন্তান মিনারুল গুলিবিদ্ধ হয়ে গত ২০ জুলাই প্রাণ হারিয়েছ। সন্তান হারানোর এ শোক সইবার মতো নয়। তিনি পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে তার সন্তানকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করার জন্য দোয়া করেন।
রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত ৩ জনের মধ্যে রয়েছেন এ দুজন। এর মধ্যে সাকিব আনজুম রাজশাহী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মিনারুল ইসলাম ইপিজেড এর বেঙ্গল কোম্পানির সিনিয়র অপারেটর ছিলেন। অপরজন হলেন- ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা আলী রায়হান।
দায়িত্ব গ্ৰহণের প্রথম দিনই (রোববার, ৩ নভেম্বর) দুপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাকিব আনজুম ও মিনারুলের পরিবারের খোঁজ-খবর নেন নবাগত জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার।
এর মধ্য ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাকিব আনজুম রাজশাহী মহানগরীর রানীনগর এলাকার মাইনুল হকের ছেলে এবং মিনারুল ইসলাম মহানগরীর গোলজারবাগ এলাকার মৃত. এনামুল হকের ছেলে। #
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২৪
এসএস/জেএইচ