ঢাকা: সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক সৌভিক করিমের নামে বাংলামোটর-মগবাজার সড়কের নামকরণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বছরের ৭ নভেম্বর বাংলামোটর-মগবাজার সড়কে ট্রাকচাপায় নিহত হন ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক দুই নেতা।
দুই নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় বাংলামোটর-মগবাজার সড়কের দুর্ঘটনাস্থলে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক শুভ দেবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, অর্থ সম্পাদক ফারহানা মুনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা মহানগরের সভাপতি আল-আমিন রহমান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। দুর্ঘটনা বলা হলেও আমরা মনে করি সড়ক দুর্ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড। রাস্তার দুরাবস্থা, যথাযথ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা না থাকা, যানবাহনের ফিটনেস ও অদক্ষ চালকের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। আর এসব দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের তারা এসব ব্যাপারে উদাসীন; যার ফলেই প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। সেজন্যই আমরা সড়ক দুর্ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা না বলে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলি। সড়কে এই কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের শিকার যেন আর কাউকে হতে না হয়, সেজন্য সড়ক নিরাপদ করতে সমন্বিত উদ্যোগ নেবার দাবি জানাই।
সভাপতির বক্তব্যে মশিউর রহমান খান বলেন, আমাদের দুই অগ্রজ যারা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ছাত্রজীবন থেকেই সক্রিয় ছিলেন, গত বছরের ৭ নভেম্বর ইস্কাটনে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারা নিহত হন। বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ যে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন কিন্তু এটিকে কখনোই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তা সমাধানে কোনো সমন্বিত উদ্যেগ নিতে আমরা দেখিনি। বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনামলে লুটপাটের প্রধান খাত হয়েছিল সড়ক ও মহাসড়কগুলো। কিন্তু লুটপাটে তারা যতটা মনোযোগী ছিলেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে ততটা তৎপর ছিলেন না। যার কারণেই ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাবি দমাতে শিক্ষার্থীদের ওপর বিপুল দমন-পীড়ন করেছিল তৎকালীন ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার। আমাদের আবার সরব হতে হবে সড়ককে নিরাপদ করতে, সড়কের নিরাপত্তাকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেজন্যই আমরা এই (বাংলামোটর-মগবাজার) সড়কের নাম ‘আরিফ-সৌভিক সড়ক’ করার দাবি জানাই। নিরাপদ সড়ক নিয়ে সচেতনা তৈরিতে আমরা সামনের দিনে আরও কর্মসূচি নিয়ে হাজির হব।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন নিহত সৌভিক করিমের মা রওনক করিম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, দীপক কুমার রায়, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি প্রবীর সাহা, গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস জামানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৪
এমজেএফ