ঢাকা: সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর) খাতে বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বসুন্ধরা পেপার মিলস ২১.৩৮ শতাংশ বেশি বিনিয়োগ করেছে বলে বার্ষিক সাধারণ সভায় জানানো হয়।
একইসঙ্গে গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে কোনো লভ্যাংশ প্রদান না করার বিষয়টিও অনুমোদিত হয় বার্ষিক সাধারণ সভায়।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেডকোয়ার্টারসে ও ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত ৩১তম এজিএমে কোম্পানির বিকল্প পরিচালক এআর রশীদি এসব জানান।
৩১ তম এজিএমে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি মেনে প্রতিষ্ঠানের নাম বসুন্ধরা পেপার মিলস পিএলসি হিসেবে অনুমোদন করেন পরিচালকগণ।
সভাপতির বক্তব্যে বিকল্প পরিচালক এআর রশীদি বলেন, আলোচ্য বছরে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এ খাতে প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ২১.৩৮ শতাংশ বেশি।
তিনি বলেন, প্রায় সকল খাতেই ব্যায় বৃদ্ধি পাওয়ায় কোম্পানির মোট আয় ২.৪৫ শতাংশ এবং নিট আয় ৫৭.৯১ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১৯.১৫ কোটি টাকা।
এআর রশীদি বলেন, কাগজ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও এর জন্য ব্যবহৃত সমস্ত কাচামালই বিভিন্ন দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় আমদানি করতে হয়। কাগজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহের অপ্রতুলতা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্রমের মজুরি বৃদ্ধি, আর্ন্তজাতিক বাজারে পাল্পের মূল্যের বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে তারতম্য, আন্তর্জাতিক রুটে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি নানাবিধ কারণে কাগজ ও কাগজজাত সামগ্রী উৎপাদনের ব্যয় বিগত বছরেও উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এআর রশীদি বলেন, অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে সৃষ্ট অর্থনেতিক সংকটের মধ্যেও বসুন্ধরা পেপার ৬২৮৫.৩৩ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি করেছে।
প্রায় ৪,৫০২ জন নিবেদিত প্রাণ কর্মীবাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত এই কোম্পানি আলোচ্য বছরে আয়কর, আবগারী শুল্ক, সমপূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর বাবদ ১৭১ কোটি টাকা পরিশোধ করে রাষ্ট্র-উন্নয়নের অংশীদার হয়েছে বলে জানানো হয় সাধারণ সভায়।
এআর রশীদি বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ এখন বাসযোগ্য বিশ্বের জন্য একটি গুরতর হুমকি। এই কার্বন নির্গমনের জন্য বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করে পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করছে। পরিবেশ রক্ষা, কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ, কারখানা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বর্জ্য পুনঃব্যবহারে বসুন্ধরা পেপার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, শিল্প খাতের অংশ জিডিপির প্রায় ৩০ শতাংশ। বিভিন্ন শিল্পের সাথে এ দেশে কাগজ ও কাগজজাত পণ্যেরও ব্যাপক প্রসার ও বাজার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বর্তমানে প্রায় ১০০টিরও বেশি পেপার মিল রয়েছে, তার মধ্যে ৩০টি পেপার মিল উৎপাদনক্ষম রয়েছে।
এআর রশীদির সভাপতিত্বে পরিচালকদের পক্ষে ইমরুল হাসান, নাজমুল আলম ভূইয়া, নিরপেক্ষ পরিচালক মোস্তফা আজাদ মহিউদ্দিন সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
আরও সংযুক্ত ছিলেন বসুন্ধরা পেপারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান, প্রধান পরিচলন কর্মকর্তা মির্জা মুজাহিদুল ইসলাম, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা কামরুল হাসানসহ বিধিবদ্ধ নিরীক্ষকগণ। সভাটি সঞ্চালনা করেন কোম্পানি সচিব এম মাজেদুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
ইএসএস/এমএম