গাইবান্ধা: ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ শেষে বের হওয়ার আগেই শিক্ষার্থীর হাতে কাজ পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, বৈশ্বিক জ্ঞানসমৃদ্ধ শিক্ষা হলে বেকারত্ব থাকবে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা ইসলামিয়া মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটা বাংলাদেশ চাই যেখানে ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শেষে বেকারত্ব আর হতাশায় ভুগবে না। কয়েক টুকরা মূল্যহীন কাগজ হবে না তাদের শিক্ষার স্বীকৃতি। বরং শিক্ষাটা এমন হবে যে, শিক্ষা মানুষকে মানুষ হতে শেখাবে। শিক্ষাটা এমন হবে বৈশ্বিক জ্ঞানে তারা সমৃদ্ধ হবে। এমনিভাবে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার পাঠ চুকে বের হওয়ার আগেই শিক্ষার্থীর হাতে কাজ পৌঁছে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এভাবে প্রত্যেক তরুণ-তরুণীর হাতকে আমরা কর্মীর হাতে পরিণত করতে চাই। আর সেই তরুণদের হাতেই আমরা বাংলাদেশটা তুলে দিতে চাই।
নিজে একজন চিকিৎসক হয়ে লজ্জার সঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, হাসপাতাল আর আদালত মানুষের দুনিয়ার জীবনে শেষ ঠিকানা হিসেবে বিবেচিত। কারণ মানুষ অসুস্থ হলে হাসপাতালে ও সুবিচারের জন্য আদালতের আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানেও মানুষ শান্তি পাচ্ছেন না। কারণ তারা শিক্ষিত হলেও মানবতা শিখেনি। সে মনে করছে মেধার জোরে সে ওই চেয়ারে বসেছে। কিন্তু সে ভুলে গিয়েছে তার বিকাশ ঘটার পেছনে এই দেশের একজন ভিক্ষুক ভাই কিংবা বোনের অবদান রয়েছে। সারাদিন দ্বারে দ্বারে হাত পেতে পেতে যে টুকু ভিক্ষা পায়, সন্ধ্যায় সেও পেটের বাজারে যায় সদাই কিনতে। আপনাকে যেমন ভ্যাট দিতে হয়, তাকেও দিতে হয়। আপনার এবং তার ট্যাক্সের টাকা আলাদা করে রাখা হয় না। রাষ্ট্রের ট্রেজারিতে একাকার হয়ে যায়।
তুমি যে স্কুল-কলেজে পড়ে ডাক্তার হয়েছ, বিচারক হয়েছ সরকারি প্রতিটি বিল্ডিংয়ের প্রতিটি ইট-বালুতে ওই ভিক্ষুকের ট্যাক্সের টাকা লেগে আছে। সুতরাং তুমি দায়বদ্ধ এ দেশের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে। এই অনুভূতি জাগ্রত করতে হবে। তবেই সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতায় গেলে আমরা একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও অহংকার করার মতো দেশ গড়ে তুলবো। যেখানে কোনো চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, সন্ত্রাসী এবং ঘুষ-দুর্নীতি থাকবে না।
জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল করিম সরকারের সভাপতিত্বে কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ প্রমুখ।
দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর এই মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশ করছে জামায়াত। ২০০২ সালে জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত নেতা শহীদ দেলওয়ার হোসেন সাঈদী এই মাঠে তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে বক্তব্য রাখেন। এরপর এই মাঠে আর কোনো প্রকাশ্য সমাবেশ করতে পারেনি জামায়াত।
কর্মী সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমানকে একনজর দেখতে তার কথা শুনতে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের ঢল নামে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
আরএ