ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

স্বাধীন জীবনের জন্য বাবাকে খুন! ১০ মাস পর রহস্য উদ্ধার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৫
স্বাধীন জীবনের জন্য বাবাকে খুন! ১০ মাস পর রহস্য উদ্ধার

বরিশাল: বাবার অনুশাসন থেকে রক্ষা পেতে, স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে নিজের বাবাকে হত্যা করেছেন এক ছেলে! বাবাকে হত্যার ১০ মাস পর গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায়।

বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) বরিশাল আদালতে হত্যাকারী ছেলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে জানিয়েছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম।

হত্যার শিকার মো. রুস্তুম আলী হাওলাদার (৭৫) বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাওকাঠি গ্রামের মৃত আতাহারউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে। হত্যাকারী তার একমাত্র ছেলে বাদশা হাওলাদার।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম জানান, ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল রুস্তুম আলী হাওলাদার নিখোঁজ হন। দুই দিন পর বাড়ির পাশের কচুক্ষেত থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। গত ২৮ ডিসেম্বর ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দেখা যায়, বৃদ্ধ রুস্তুম আলী হাওলাদারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় তার ভাই আইউব আলী বাদী হয়ে গত ২১ জানুয়ারি বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

ওসি বলেন, রুস্তুম আলী হাওলাদারের ছেলে বাদশা হাওলাদারের অস্বাভাবিক জীবন যাপন ও কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। গত ২২ জানুয়ারি পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বাদশা তার বাবা রুস্তুম আলী হাওলাদারকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে ওসি বলেন, হত্যার শিকার রুস্তুম আলী দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। দেশে ফিরে দাওকাঠি গ্রামে দ্বিতল ভবন করে পরিবার নিয়ে বাস করেন। একমাত্র ছেলে বাদশাকে প্রতিষ্ঠিত করতে বিভিন্ন চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনোভাবেই তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। এজন্য ছেলেকে অনুশাসনসহ বকাবকি করেন। এ নিয়ে বাবার ওপর ক্ষুদ্ধ হন বাদশা। বাবার অনুশাসন থেকে রক্ষা ও স্বাধীন জীবনযাপনের জন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে রুস্তম আলী বাড়ির পাশের কচুক্ষেতে কাজ করছিলেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ছেলে বাদশা কচুক্ষেতে গিয়ে একটি গামছা দিয়ে বাবার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন। পরে তার লাশ কচুক্ষেতে রেখে পাতা দিয়ে ঢেকে দেন। বাবাকে হত্যার পর স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে থাকেন বাদশা। বাবার হত্যা ও পরিকল্পনাসহ সকল বিষয়ে গোপন রাখতে নানা কৌশলও অবলম্বন করেন তিনি।

ওসি আরও বলেন, ছেলে বাদশা তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বরিশালের অতিরিক্ত চিফ জুডসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেলিম রেজার কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৫
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।