ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাখ্যান পরিসংখ্যান ক্যাডারদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাখ্যান পরিসংখ্যান ক্যাডারদের

ঢাকা: জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডারকে প্রস্তাবিত সার্ভিসসে অন্তর্ভুক্ত না করার সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন।  

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবে হাজারো ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে এক নতুন জাগরণের সূচনা হয়েছে। বাংলাদেশকে একটি বৈষম্যহীন ও আত্মনির্ভরশীল উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে সরকারকে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার সার্ভিস নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে। জুলাই ২০২৪-এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ জুড়ে যে সার্বিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন তাকে স্বতঃস্ফূর্ত অভিবাদন জানাচ্ছে। সরকারের এ উদ্যোগকে সফল করতে জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (বিবিএস) কর্মরত বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পেশাগত দক্ষতাকে সমুন্নত রেখে ইতোমধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন ও স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী জাতীয় জনমত জরিপের কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করা হয়েছে।

একদিকে যখন বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের দক্ষ সদস্যরা দেশের এ সংস্কার কার্যক্রমকে গতিশীল ও জনবান্ধব করতে মাঠ পর্যায়ে ব্যস্ত রয়েছে, সে মুহূর্তে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ পরিসংখ্যান পেশাজীবী এ সার্ভিসের অস্তিত্বের ওপর আঘাত হেনেছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের গত ৮ ফেব্রুয়ারির দাখিল করা প্রতিবেদনে বিদ্যমান সিভিল সার্ভিসগুলো পুনর্বিন্যাস করে বিভিন্ন সার্ভিস ও এর কাঠামো পুনর্গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। একমাত্র বিসিএস (পরিসংখ্যান)-ক্যাডারকে পুনর্গঠিত সার্ভিসগুলোর প্রস্তাবে ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৮০ সালে সৃজিত গুরুত্বপূর্ণ পেশাভিত্তিক এ ক্যাডার সার্ভিসকে ‘অস্তিত্বহীন’ করার মতো অদূরদর্শী সুপারিশ আমাদের ব্যথিত করেছে। সব বৈষম্য নিরসন ও গতিশীল জনবান্ধব জনপ্রশাসন তৈরির জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টা ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে এ সুপারিশ সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। মূলত সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মাধ্যমে বিবিএসে নিযুক্ত মেধাবী পরিসংখ্যানবিদদের সমন্বয়ে গঠিত এ সার্ভিসকে অবমূল্যায়ন করে আরেকটি নতুন বৈষম্য চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও সুপারিশ করার আগে মূল স্টেকহোল্ডার হিসেবে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন কিংবা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে তা সমাধানে কোনো প্রকার মতামত নেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেনি। এমনকি বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে লিখিত কিছু সংস্কার পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলেও তা আমলে না নিয়ে একতরফাভাবে একটি ঐতিহ্যবাহী সিভিল সার্ভিসকে অস্তিত্বহীন করার মতো সুপারিশ করে একটি দায়সারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়।

বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা একান্তভাবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫
এসমএকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।