লালমনিরহাট: অবশেষে সন্তানের পিতৃ পরিচয় এবং স্ত্রী হিসেবে নিজের স্বীকৃতি পেলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের জান্নাতুল ইসলাম নাঈম আকলিমা (১৮)।
শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কালীগঞ্জ থানায় প্রেমিক নাঈম ইসলাম বিল্লুর পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে তাদের বিবাহ রেজিস্ট্রি হয়।
পুলিশ জানায়, কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের পূর্ব দুহুলী গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে নামুড়ি মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আকলিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে একই উপজেলার কাকিনা চাপারতল এলাকার সবুজ মিয়ার ছেলে কাকিনা উত্তর বাংলা ডিগ্রি কলেজের ছাত্র নাঈম ইসলাম বিল্লু। এর একপর্যায়ে তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়।
এতে আকলিমা অন্তসত্ত্বা হলে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কালবিলম্ব করে বিয়ে না করায় আকলিমা গর্ভস্থ সন্তানের পরিচয় দাবি করে চলতি বছরের ১৯ মার্চ লালমনিরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে ২৩ মে ছেলে সন্তান জন্ম দেন আকলিমা।
কুমারী মায়ের এ সন্তান নিয়ে রীতিমত হৈ চৈ পড়ে যায় পুরো গ্রামে। এ ঘটনায় স্থানীয় মসজিদ কমিটি আকলিমার বাবা ও চার চাচার পরিবারকে একঘরে করে।
বিষয়টি নিয়ে ৩ আগস্ট বাংলানিউজে ‘সন্তানের পিতৃ পরিচয় দাবি: লালমনিরহাটে ৫ পরিবার একঘরে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন।
অবশেষে লালমনিরহাট পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পলাতক প্রেমিক বিল্লুর সন্ধান পায়। পরে, বিল্লু আকলিমাকে বিয়ে করতে রাজি হলে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কালীগঞ্জ থানায় বিয়ের আয়োজন করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুজ্জামান। প্রেমিক বিল্লু তার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে চার লাখ টাকা মোহরানায় বিয়ে করেন প্রেমিকা আকলিমাকে।
বিয়ে শেষে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল রহমান সাড়ে ৪ মাস বয়সী সন্তানসহ আকলিমাকে বিল্লুর হাতে তুলে দেন।
আকলিমা বলেন, পুলিশ আর সাংবাদিকদের জন্য আজ আমি আমার অধিকার ফিরে পেয়েছি।
নাঈম ইসলাম বলেন, অন্যের কু-পরামর্শে ঘটনাটি ঘটেছে। ভুল বুঝতে পেরে সন্তান আর স্ত্রীকে গ্রহণ করেছি।
ওসি মঞ্জুরুল রহমান বাংলানিউজকে জানান, বিল্লুর সন্ধান পাওয়ার পর তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সে রাজি হওয়ায় থানায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৫
এমজেড