ঢাকা: ঈদের বাকি নেই আর এক সপ্তাহ সময়। ঘরে ফেরা মানুষদের জন্য নৌ ও রেলপথের মতোই বিক্রি হচ্ছে সড়ক পথেরও অগ্রিম টিকিট।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিআরটিসি’র তুলনায় ব্যক্তি মালিকানা বাসের সেবার মান ভালো হওয়ায় যাত্রীরা বিভিন্ন কোম্পানির বাসের প্রতি আগ্রহী। আর বিআরটিসির কাউন্টার কর্তৃপক্ষেরও নজর নিম্ন আয়ের মানুষের দিকে। যাদের নামমাত্র যাত্রীসেবা দিয়েই সন্তুষ্ট করা যাবে। সব মিলিয়ে বিআরটিসির কাউন্টারগুলোতে টিকিট নিতে আসছেন হাতে গোনা যাত্রী। তাই বিআরটিসির কাউন্টার ম্যানেজারদের আশা ঈদের আগে গার্মেন্টস ছুটি হলে কাউন্টারগুলোয় যাত্রী সংখ্যা বাড়বে।
![](files/Ticket_01_717096741.jpg)
শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল ও গাবতলীর বিআরটিসির টিকিট কাউন্টার ঘুরে, যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এসব তথ্য। এছাড়া রাজধানীর কল্যাণপুর, মোহাম্মাদপুর, মিরপুর-১২ থেকেও ঈদের টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
গাবতলী বাস টার্মিনালে টিকেটের জন্য নেই লাইন, নেই তেমন ভিড়ও। যাত্রীরা আসছেন, টিকেট নিয়ে যাচ্ছেন। মোহাম্মাদপুরে কর্মরত রংপুরের গার্মেন্টস কর্মী সোহেল পারভেজ ঈদের আগের দিনের টিকেট নিতে গাবতলী আসেন। রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় বললেন, সারাদিন কাজ করতে হয় সময় পাওয়া যায় না। এছাড়া অন্য কোনো পরিবহনের টিকিট নেই তাই সরকারি পরিবহনই ভরসা।
গাবতলী বিআরটিসির বাস কাউন্টারে কর্মরত আলমগীর হোসেন বলেন, টিকিট বা বাসের কোনো অভাব নেই কিন্তু আমাদের বেশির ভাগ যাত্রীই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার গার্মেন্টসকর্মী তাই এখনও ভিড় হয়নি। ভিড় বাড়বে ঈদের আগের দুইদিন।
![](files/Ticket_02_914622597.jpg)
সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী ঢাকা থেকে রাজশাহী ও নওগাঁর ভাড়া ৪২০ টাকা এবং রংপুরের ভাড়া ৫০০ টাকা।
গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, এখান থেকে দক্ষিণবঙ্গের গোপালগঞ্জ, খুলনা, পিরোজপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলার টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এখানেও যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই।
গোপালগঞ্জের টিকিট নিতে আসা সরকারি তীতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় যাতায়াতের জন্য রেল, লঞ্চ, বিমান কিছুই নেই, একমাত্র ভরসা সড়ক পরিবহন। আবার নেই হানিফ, ঈগলের মতো পরিবহন কোম্পানি। ফলে বিআরটিসির বাসেই যাওয়া-আসা। তবে বিআরটিসির মান প্রাইভেট বাস কোম্পানির মতো না হলেও আগের তুলনায় ভালো। এখনতো তাদের এসি বাসও যায়।
![](files/Ticket_03_443155609.jpg)
বিআরটিসির গুলিস্তান কাউন্টারে কর্মরত মো. সেলিম শেখ বলেন, এখানে কখনই টিকিটের জন্য লাইন দিতে হয় না। আসলেই টিকিট পাওয়া যায়। তবে এবার টিকিট কম বিক্রি হচ্ছে। হয়ত ঈদের আগের দুইদিনে বাস টিকিটের চাহিদা বেশি হবে। শেষ পর্যন্ত সিট খালি থাকবে না।
সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী এখান থেকে গোপালগঞ্জের নন এসি বাসের ভাড়া ৪০০ টাকা ও এসি ভাড়া ৫৫০ টাকা। খুলনার নন এসি বাসের ভাড়া ৫৫০ টাকা ও এসি বাস ভাড়া ৭৫০ টাকা।
এছাড়া মতিঝিল থেকে কিছুক্ষণ পরপর ছেড়ে যাচ্ছে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, দাউদকান্দির বাস। এসব অঞ্চলের দূরত্ব কম হওয়ায় কোনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না।
![](files/Ticket_04_706784335.jpg)
উল্লেখ্য, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলায় বিআরটিসির ৫০০টি বাস এবং ঢাকার বাইরের জেলা থেকে ৪০০টি বাসসহ মোট ৯০০ বাস পরিচালিত হবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে আরও ১৬১টি বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ঈদের আগের দিন সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী ডিপো থেকে যাত্রী চলাচলের সুবিধার্থে ৫৫টি বিআরটিসির বাস প্রস্তুত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৫
এইচআর/আইএ