ঢাকা: তার নাম আবু সিদ্দিক। ৬৫ বছর বয়সে জীবনের প্রায় শেষলগ্নে এসে হজে যাওয়ার জন্য এসেছেন ঢাকার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
কিন্তু তার ভাগ্য দুর্ভাগ্যে পরিণত হলো। শেষ পর্যন্ত তার আর হজে যাওয়া হলো না।
তিনি এসেছিলেন নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার দক্ষিণ মির্জানগর থেকে।
তার হজে যাওয়ার কথা ছিল সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত সাড়ে ৪টায়। তার ফ্লাইট নম্বর- বিজি ১০৩৯। কিন্তু তার আগেই রাত ২টার দিকে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। এ সময় সঙ্গে কোনো নিকট আত্মীয় ছিলেন না তার।
ঘটনা দেখে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের সদস্যরা (এপিবিএন) তাকে পিতৃসম্মানে কাছে টেনে নেন। তারা তাকে বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
এরপর প্রাথমিক চিকিৎসায় বৃদ্ধ আবু বকর সিদ্দিক সুস্থ বোধ করলে বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করে ইমিগ্রেশনের ব্যবস্থা করা হয় তার। শেষে তিনি ইমিগ্রেশনে আসেন ফ্লাইটে যাওয়ার জন্য এবং যথাসময়ে ফ্লাইটে উঠে বসেন।
এভাবেই বাংলানিউজের কাছে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সিনিয়র এএসপি আলমগীর হোসেন শিমুল।
তিনি জানান, ২য় ধাপে হজযাত্রী আবু বকর সিদ্দিক অনেকটা সুস্থ হয়ে বিমানের আইএনএস গেট পার হওয়ার পর বোর্ডিং লাউঞ্জে ওঠেন। এরপর ফ্লাইটে আসন নেন।
কিন্তু এ সময় হঠাৎ করে তার দেহে শুরু হলো কাঁপুনি। ধরাধরি করে তাকে নিয়ে আসা হলো বিমানবন্দর চিকিৎসা কেন্দ্রে। এ দিকে আর কিছুক্ষণের মধ্যে বিমান ছেড়ে যাওয়ার তাড়া। আবার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নেওয়া হলো আইএনএস গেটে।
কিন্তু পাইলট তাকে ভ্রমণ উপযোগী মনে না করায় অফলোড করা হলো তাকে।
এএসপি শিমুল বলেন, অনেক চেষ্টা করেও হজে পাঠানো গেল না বৃদ্ধ আবু সিদ্দিককে। তবুও তিনি হাত তুলে মহান আল্লাহর কাছে আকুতি জানালেন তাকে যেন হজে সওয়াব দেন!
অবশেষে ৩৭৯ জন হজযাত্রী নিয়ে ফ্লাইট চলে গেল। তিনিই শুধুই রয়ে গেলেন বাংলাদেশে।
শেষ সংবাদ পর্যন্ত আবু বকর সিদ্দিকের এক স্বজন তাকে নিয়ে বিমানবন্দর থেকে গ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৫
এনএইচএফ/এবি