ঢাকা: রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার জায়গায় আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানার পক্ষে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে হাইকোর্টে দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে করা আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন।
ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী।
আদালতে কনকর্ডের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন এ ওয়াই মশিহউজ্জামান।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে জারি করা এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এতিমখানার জায়গায় কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানার পক্ষে বাজেয়াপ্ত করে চার দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ের পর রিট আবেদনের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, আদালত এতিমখানা রক্ষায় চার দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। সেগুলো হলো- ১. আজিমপুর এতিমখানার সম্পত্তি সংরক্ষণ করতে হবে, ২. এতিমখানার সম্পত্তি হস্তান্তর সম্পর্কে ২০১৩ সালের ২২ জুলাইয়ের দলিল এবং ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিলের আমমোক্তারনামা দলিল বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ সেগুলো শুরু থেকেই বাতিল। ৩. এতিমখানার জায়গায় কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানার পক্ষে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ৪. কনকর্ডকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে স্থাপনা ও সম্পত্তি এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। ব্যর্থতায় সরকারকে সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে এবং এতিমখানার প্রয়োজনে ডেভলপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, ১৯০৯ সালে ঢাকার নবাব ‘সলিমুল্লাহ এতিমখানা’ স্থাপন করেন। সরকারের কাছ থেকে এ এতিমখানা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন সময় জমি লিজ নিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। গত ২০০৩ সালের ২২ জুলাই এতিমখানার সভাপতি শামসুন্নাহার ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জি এ খান আহসান উল্লাহ এতিমখানার ২ বিঘা জমি ডেভেলপার কোম্পানি কনকর্ডের কাছে হস্তান্তর করেন। এতিমখানার সম্পত্তি অবৈধ হস্তান্তর সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা সংযুক্ত করে চার জন ছাত্রের পক্ষে রিট পিটিশন দায়ের করেন মনজিল মোরসেদ। পরে ওই রিট পিটিশনে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) পক্ষভুক্ত হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, এতিমখানার সম্পত্তি সরকারে কাছ থেকে লিজ নেওয়া এবং লিজ চুক্তিতে এতিমখানা সম্প্রসারণের জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হয়। শর্ত
ছিল- প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো কাজে জমি ব্যবহার করা যাবে না। এরপরও এতিমখানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে এতিমখানার সম্পত্তি কনকর্ড গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৫
ইএস/আরএম