রংপুর থেকে: একদিন বাদেই মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। টানা বৃষ্টিতে গত কয়েকদিন কাদাপানিতে ডুবেছিল রংপুরের পশুরহাট।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর রোদ উঠেছে, জমে উঠেছে পশুর হাটের কেনাবেচা। বিকেলে রংপুর নগরের লালবাগ পশুরহাটে গিয়ে দেখা গেল বিক্রির জন্য আনা হয়েছে বিভিন্ন বয়স ও আকারের হাজার হাজার গরু, ছাগল, মহিষ। পশুরহাটে ক্রেতাদের উপস্থিতিও ভালো। খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা-ইজারাদার সবাই।
সপ্তাহে রোব ও বুধবার বসে রংপুর শহরের দক্ষিণ প্রান্তের প্রবেশপথে লালবাগ পশুরহাট। ঈদের আগে অত্র এলাকার সব থেকে বড় এটাই শেষ হাট। তাই হাম্বা হাম্বা ডাক, দরাদরির মধ্যে ছিল উৎসাহব্যাঞ্জক পরিবেশ।
সরেজমিনে এ হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা-ইজারাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গৃহস্থের পোষা দেশীয় গরুর চাহিদা তুঙ্গে। চাহিদার সঙ্গে সরবরাহও ভালো।
মাঝারি আকারের এসব গরুর দাম ২৫ থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে। রয়েছে লাখ টাকার উপরের দামের গরু। দামে খুব একটা পার্থক্য না থাকলেও ক্রেতারা পছন্দমতো কোরবানির পশু কিনতে পারছেন।
নগরের ধাপ এলাকা থেকে লালবাগ পশুহাটে এসে ৩৭ হাজার টাকায় কোরবানির গরু কিনেছেন একই এলাকার সরকারি চাকরিজীবী এনায়েত হোসেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন অফিস এবং বৃষ্টির কারণে গরু কেনা হয়নি। আজ আবহাওয়া ভালো, দেখেশুনে গুরু কিনতে পারলাম। দামে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
গৃহস্থের পোষা গুরুতে ভেজাল নেই, বিষাক্ত ওষুধ দিয়ে মোটাতাজা করা হয়না। এজন্য এসব গুরুর চাহিদা বেশি বলে জানান ইজারাদার।
নগরের পার্শ্ববর্তী মহব্বতখান এলাকা থেকে তিনটি দেশী গরু নিয়ে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। প্রতিটি প্রায় তিন মণ মাংসের এসব গরুর প্রতিটির বিক্রির জন্য দাম হাঁকছেন ৪৫ হাজার টাকা। দাম-দর এদিক-ওদিক হলেও খুব বেশি পর্থক্য থাকছে না বলে জানান আমিনুল।
কোরবানির পশু কেনাবেচায় খুশি লালবাগহাটের ইজারাদার আব্দুল্লাহেল কাফি দুদু। তার সঙ্গে রশিদ লেখার কাজ করছেন মাসুদ রানা। তিনি বলেন, ঈদের আগে শেষ হাট এবং বৃষ্টি না থাকায় আজকে শত ভাগ কেনা বেচা হবে। দুপুরের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কেনাবেচার আশা করছেন তারা।
নিজ খামারে পোষা তিনটি বড় গরু নিয়ে এসেছেন দমদম এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন। প্রায় ১০ মণ মাংসের প্রতিটি গরুর দাম হাঁকছেন দেড় লাখ টাকা করে। গরুর সঙ্গে এসেছেন আফজালের স্ত্রীও। জানতে চাইলে আফজাল বলেন, অনেক দিন বাড়িতে ছিল, মহব্বত তৈরি হয়েছে, তাই সবাই এসেছি।
গরুর পাশাপাশি এই হাটে ছাগলের বেচাবিক্রি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি ছাগল বিক্রি হচ্ছে ছয় থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে ১০-১৫ হাজার টাকার ছাগলের চাহিদাই বেশি।
এদিকে রংপুরের অন্যান্য পশুরহাটগুলোতেও এদিন বেচাকেনা জমে উঠেছিল বলে জানান স্থানীয়রা। বৃষ্টি না থাকায় বুড়িরহাট, গঙ্গাচড়ার গজঘণ্টা পশুরহাটসহ অন্যান্য এলাকার হাটগুলোতে বেচাকেনা ও ক্রেতা বিক্রেতাদের উপস্থিতি জমজমাট ছিল।
পশু বেচাকেনার পাশাপাশি পশুর খাদ্য, দা-ছুরি-চাকু, মাংস কাটার কাঠের গুঁড়ি ও চাটাই বিক্রি হচ্ছে সমান তালে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
এমআইএইচ/জেডএস