ঢাকা: গত কয়েকদিনে রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাটে ট্রাক থেকে পশু নামিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে পশু বিক্রেতাদের। ক্রেতা ও বিক্রেতার চেয়ে পশুর সংখ্যাও ছিল বেশি।
কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পূর্বাচলমুখী ৩০০ ফুট সড়কের পাশে পুলিশ হাউজিংয়ের খালি জায়গায় (বসুন্ধরা) কোরবানির পশুর হাটে দেখা যায় একেবারেই ভিন্ন চিত্র।
পশুর চেয়ে ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সংখ্যাই বেশি। এবার ক্রেতারা পশু কিনে ট্রাকে তুলছেন। কেউবা পায়ে হেঁটেই রওনা হয়েছেন গন্তব্যে।
সব মিলিয়ে পশু বিকিকিনিতে জমে উঠেছে হাটগুলো। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে পাওয়া যায় এ চিত্র।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ঈদ-উল আযহার বাকি আছে মাত্র একদিন। তাই যা কেনার আজকেই কিনতে হবে। এছাড়া অনেকেই পশু রাখার পর্যাপ্ত জায়গা না পেয়ে আজকের দিনকেই বেছে নিয়েছেন পশু কেনার জন্য। তাই পশু কেনা-বেচা গত কয়েকদিনের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।
পশুর হাটে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বুধবারের (২৩ সেপ্টেম্বর) চেয়ে পশুর সংখ্যা কমে গেছে, বেড়েছে ক্রেতাদের সংখ্যা। তবে পশুর কোনো সঙ্কট দেখা যাবে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া অনেক হাট থেকেও এই হাটে পশু আসতে দেখা গেছে।
![](files/HAT1_878802163.jpg)
ক্রেতা ও বিক্রেতা সবাই খুশি
চলতি বছরে কোরবানির পশুর সঙ্কট হবে, ভারতীয় গরুর উপস্থিতি, মায়ানামার থেকে গরু আসছে এরকম নানা গুঞ্জন রটলেও বাস্তবে পরিস্থিতি খুবই স্বাভাবিক আছে।
পশুর দাম ও উপস্থিতিতে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই খুশি। বুধবার মানিকগঞ্জ থেকে আতোয়ার, রফিক, সামাদ ও রফিকুলসহ নয়জন ১৯টি গরু নিয়ে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালেই বিক্রি হয়ে গেছে তাদের পশুগুলো।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খামারি আতোয়ার জানান, দাম যা পেয়েছেন, তাতে তারা সবাই খুশি। নতুন হাট হিসেবে প্রথমে একটু শঙ্কাতেই ছিলেন বিক্রি হবে কি-না এ নিয়ে। তবে তাদের মধ্যে জলিল একটু অখুশি ভাবেই জানালেন, আর একটু দাম বেশি হলে ভালো হতো। এ সময় পাশ থেকে রফিক বলে ওঠেন, ভালো দামের কি শেষ আছে!
চাহিদার শীর্ষে ছোট ও মাঝারি গরু
কুষ্টিয়া থেকে শফিকুল ইসলাম ও মেজবাহ উদ্দিন বিশাল আকৃতির কয়েকটি গরু নিয়ে এসেছেন। গত তিনদিন ধরে ক্রেতার অপেক্ষায় আছেন, কিন্তু খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দাম ওঠছে না।
শফিকুল ইসলাম শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দু’টি গরুর দাম চার লাখ টাকা বলেছে। কিন্তু খরচই হয়েছে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার মতো। এবার হয়তো বা গরু ব্যবসায় আর্থিক ক্ষতিতে পড়তে হবে।
অন্যদিকে ভিন্ন চিত্র ছোট ও মাঝারি গরুর ক্ষেত্রে। ক্রেতারা এসব গরুর প্রতি ঝুঁকছেন। রাজধানীর রাস্তাতেও দেখা যাচ্ছে ছোট ও মাঝারি গরু কিনে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা। গত কয়েকদিনে ছোট ও মাঝরি গরুও বিক্রি বেশি হচ্ছে বলে ক্রেতা ও বিক্রেতারা জানালেন।
![](files/hat2_461805922.jpg)
৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ছোট ও ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে মাঝারি আকারের ভালো গরু পাওয়া যাচ্ছে এ হাটে। এছাড়া ছাগলের দামও প্রায় অনেকটা হাতের নাগালেই আছে বলে জানালেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
উৎসবের আমেজ পশুর হাটে
ঈদের উৎসবের আমেজও ধরা দিয়েছে পশুর হাটে। গত কয়েকদিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার প্রায় সবাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে পছন্দের পশুটি কিনতে এসেছেন হাটে।
মহাখালী থেকে শামীম আহম্মেদ তার পরিবার নিয়ে গরু কিনতে এসেছেন। তিনি জানান, কোরবানির পশুকে ঘিরে পরিবারের সবার অনেক বেশি আগ্রহ থাকে। সকালে যখন সবাই শুনেছে কোরবানির পশু কিনতে তিনি আসছেন, সঙ্গে সঙ্গে সবাই আবদার জানালো তারাও হাটে যাবে।
তবে বেশ ভালো লাগছে, কিন্তু রোদ থাকায় একটু হাঁপিয়ে উঠেছে।
অনেক বিদেশিকেও দেখা গেলো এ পশুর হাট পরিদর্শন করতে। ছিন্নমূল শিশুদের হাত ধরে পশু দেখছেন তারা। বেশ আনন্দই পাচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫
একে/এএসআর
** গরু নেই, হাটে ক্রেতার ঢল