ঢাকা: পশুরহাটে বিকিকিনির মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের অনেক মানুষের কর্মের চাকাও ঘুরছে। হাট থেকে যানবাহনে পশু তুলে দেওয়ার পাশাপাশি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার বিনিময়ে পাচ্ছেন টাকা।
অনেকেই চা, বিস্কুট, বাদামসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার বিক্রি আয় করছেন। বসে নেই পশুরখাদ্য ও কোরবানির সরঞ্জাম বিক্রেতারাও। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের আয়ও বেশ।
ঈদের আগে পরিবারের পরিশ্রমের এই টাকাগুলো যোগ করতে পেরে তারাও অনেক খুশি। প্রসঙ্গটি তুলতে অনেকেই আনন্দের হাসি দিয়ে জানালেন, বসে থাকার চেয়ে পরিশ্রম করে যদি কিছু টাকা আয় হয়, তাতে মন্দ কী! ঈদের আগে পরিবারের জন্য বাড়তি কিছু কেনা যাবে।
গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন পশুরহাটে এরকম দৃশ্যের দেখা মিলেছে। এতে অবশ্য ক্রেতাদের সুবিধাই হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পূর্বাচলমুখী ৩০০ ফুট সড়কের পাশে পুলিশ হাউজিংয়ের খালি জায়গায় (বসুন্ধরা) কোরবানির পশুরহাটে জালাল ও সাইদুল একটি গরু গাড়িতে তুলে পেলেন ৬০০ টাকা।
এদের মধ্যে জালাল পেশায় ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ও সাইদুল দিনমজুর। জালাল বুধবার ছুটিতে এসেই এ কাজে নেমে পড়েছেন। তারা দুজনই জানান, এখন তো কোনো কাজ নেই। রাত অবধি কাজ করে বেশ ভালোই আয় হয়েছে।
![](files/income1_571023338.jpg)
ক্রেতারা জানান, রাজধানীর পশুরহাটে ক্রেতাদের মধ্যে প্রায় সবাই কর্মজীবী। গরু, মহিষের পরিচর্যা ও বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসব কর্মজীবী মানুষ একেবারেই আনকোড়া হলেও আনন্দের ঘাটতি নেই।
ঈদের পশু নিতে এ সব তৃণমূল মানুষের সাহায্য নেওয়া হয়। এ সহযোগিতার জন্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন, এটাকে তারা ইতিবাচক হিসেবেই নিয়েছেন।
রাজধানীর অন্যান্য হাটেও জালাল ও সাইদুলের মতো অসংখ্য কর্মী কাজ করছেন। তাদের মতে, এর সংখ্যা কয়েক হাজার হবে।
ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে রাজধানী প্রায় জনশূন্য। সে কারণে বাদাম বিক্রি তেমন হচ্ছিল না রমজান আলীর। সে কারণে পশুরহাটে আসা তার।
তিনি জানান, গত তিনদিন ধরে খুব ভালো বেচাকেনা হচ্ছে।
একই কারণে চা-বিস্কুটের দোকান দিয়েছেন হাফিজুল ও জলিল। তারাও জানালেন, ভালো বিক্রির কথা।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিটি পশুরহাটে প্রায় ডজন খানেক খাবারের দোকান। চা-বিস্কুটের দোকানের সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো। এছাড়া পশুর খাদ্যও প্রতিটি হাটে বিক্রি হচ্ছে। পশু কোরবানি দিতে যে কাঠ প্রয়োজন, তার যোগানও রয়েছে হাটে। দেড়শ থেকে শুরু করে তিনশ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এ সরঞ্জাম।
অস্থায়ী এসব মানুষেরা জানান, ঈদ উপলক্ষে রাজধানীতে কাজ অনেক কমে যায়। তাই, এরকম কাজের সুযোগ পেলে তাদের জন্য ভালোই হয়। অন্তত বসে থেকে সময় নষ্ট করতে হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫
একে/এবি