ঢাকা: ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনদিন ধরে পণ্য খালস বন্ধ থাকায় আটকে আছে শত শত শিপমেন্ট। গোডাউনে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় কিছু শিপমেন্ট রানওয়ের পাশে পড়ে আছে বলেও জানিয়েছে বিমানবন্দর সূত্র।
সূত্র জানায়, ১৩ অক্টোবর সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু করে ক্লিয়ারেন্স এন্ড ফরওর্য়াডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্টরা। তাদের ১৭ জন লোককে কাস্টমস পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। এর প্রতিবাদে ধর্মঘট ডেকে কাজ বন্ধ রেখেছেন তারা।
বিমানবন্দরে কর্মরত সিএন্ডএফ-এর একজন এজেন্ট বাংলানিউজকে জানান, বিমান থেকে পণ্য নামিয়ে যে গোডাউনে রাখার কথা, জায়গা না থাকায় এর বাইরে পণ্য ছড়িয়ে রাখা হয়। সেগুলো আনতে গেলে পুলিশ তাদের ১৭ জনকে আটক করে নিয়ে যায়।
সিএন্ডএফ-এর ওই এজেন্ট জানান, পণ্য নামিয়ে নির্ধারিত ঘরের মধ্যে যদি রাখা হতো তাহলে তাদের ভেতরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়তো না। এখন পণ্য নির্ধারিত স্থানে রাখা হবে না, আবার ভেতরে গিয়ে আনতেও দেবে না-এর প্রতিবাদেই তারা ধর্মঘট পালন করছেন।
বিমানবন্দর কাস্টমস সূত্র জানায়, ১৩ অক্টোবর সকাল ১১ টার দিকে সিএন্ডএফ এর লোকজন মাল খুঁজতে ভেতরে প্রবেশ করলে বিমানবন্দর এপিবিএন (অামর্ড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান) তাদের কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে কাজ বন্ধ রেখে ধর্মঘট আহ্বান করে সিএন্ডএফ এজেন্টরা।
সূত্র আরও জানায়, সম্প্রতি দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের পর বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে সিএন্ডএফ এর বৈধ কার্ডধারী লোক ছাড়া কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না এমন সিদ্ধান্ত নেয়- সিভিল এভিয়েশন এবং বিমান কর্তৃপক্ষ। এর আগে বিমানের জনবল কম থাকায় সিএন্ডএফ-এর লোকজন ভেতরে ঢুকে মাল খুঁজে নিয়ে আসতে পারতেন।
এদিকে সিএন্ডএফ-এর ধর্মঘটের কারণে আমদানি পণ্য খালাস সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে শাহজালাল বিমানবন্দরে। গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন মালামাল আটকে থাকায় বিপাকে পড়েছেন আমদানি ও রপ্তানিকারকরা। শুধুমাত্র পচনশীল কোন পণ্য আসলে সেগুলো খালাস হচ্ছে।
তিনদিন থেকে মাল নিতে না পারায় সাভারে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ফেব্রিক্সের কাজ আটকে আছে বলে জানালেন ভুক্তভোগী কর্মকর্তা।
‘এসবি এক্সিলেন্স ফ্যাশন এন্ড কোম্পানি’ নামের এই কারখানার একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, তাদের ফেব্রিক্স মালামালের দুটি শিপমেন্ট আটকে আছে।
তিনি জানান, সাধারণত প্লেনে মাল আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা মাল খালাস করে নিতে পারতেন এখন তিনদিন ধরে বিমানবন্দরে এসে ঘুরে যাচ্ছেন। মাল নিতে না পারায় কারখানার উৎপাদনও আটকে আছে।
গুলশান এলাকায় আরেকটি গার্মেন্টস এক্সেসরিজ প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের ৩টি শিপমেন্টের গার্মেন্টস এক্সেসরিজ আটকে আছে। গার্মেন্টসে এসব মাল সরবরাহ করতে না পারায় ইউরোপিয়ান বায়ারদের কাছে তাদের কয়েকটি রপ্তানির অর্ডার বাতিল হতে পারে।
এ ব্যাপারে বিমানবন্দর কাস্টমসের এক সহকারী কমিশনার জানান, দিনে চার পাঁচশ’ শিপমেন্ট আসে শাহজালাল বিমানবন্দরে। তিনদিনে কয়েক হাজার শিপমেন্টের মালামাল আটকে আছে। এত মালামালের গোডাউনে জায়গা না হওয়ায় বিমান থেকে নামিয়ে খোলা মাঠে রাখা হয়েছে।
এতে বৃষ্টির পানিতে মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংকার কথা জানায় কাস্টমস সূত্র।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
এসএ/আরআই