ঢাকা, রবিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর উদ্ধার অভিযুক্ত দুই পুলিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর উদ্ধার অভিযুক্ত দুই পুলিশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়া: বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় মোখলেছার রহমান নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই পুলিশকে আড়াই ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে।

জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে তাদের উদ্ধার করে।

পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।   

নিহত মোখলেছার উপজেলার বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের দড়িপাড়া গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের ছেলে।

আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দুই পুলিশকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। অপরদিকে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক) মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) আরিফুর রহমান মন্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোন মামলা করা হবে না বলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান।

স্থানীয়রা জানান,  আতিয়ার রহমান তার জমি থেকে বাঁশ কাটার অভিযোগ এনে বড় ভাই মোখলেছার রহমানের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গাবতলী মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুর সবুর ও কনস্টেবল আব্দুর রহমান দড়িপাড়া গ্রামে যান। বাড়িতে না পেয়ে সেখান থেকে পুলিশ স্থানীয় গোলাবাড়ী বাজারে তাকে খুঁজতে যান। পরে বাজারে অবস্থানরত লোকমুখে পুলিশ জানতে পারে পাশের মড়িয়া গ্রামে মোখলেছার কবিরাজী চিকিৎসা দিতে গেছেন।

সে অনুযায়ী পুলিশ মড়িয়া গ্রামে যাওয়ার পথে ছয়মাইল নামক স্থানে বেলা ২টার দিকে মোখলেছার রহমানকে আটক করে। পরে পুলিশ তাকে মটরসাইকেলে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

এ সময় মোখলেছার রহমান পুলিশের কাছে জানতে চান, তার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ রয়েছে। এতে তার ওপর ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুর সবুর। সঙ্গে মোখলেছারের মাথার চুল ধরে তাকে উপর্যপরি কিলঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় মোখলেছার বাঁচার চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে লাথি মারেন। এতে মাটিতে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মোখলেছার রহমানের। এসব দৃশ্য দেখার পর গ্রামের লোকজন দুই পুলিশকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে গাবতলী মডেল থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা মোখলেছারের মরদেহ ও আটকে রাখা দুই পুলিশকে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু জনতা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে হাজার-হাজার নারী-পুরুষ পুলিশ দলকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

পরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) আরিফুর রহমান মন্ডল এবং গাবতলী মডেল থানার (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) আরিফুর রহমান মন্ডল বিক্ষুব্ধ জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, অভিযুক্ত দুই পুলিশের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঊর্ধ্বতন এই পুলিশ কর্মকর্তার এমন আশ্বাস পাওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
এমবিএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ