ঢাকা, রবিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

প্রথম দিনে বাদী ও রাজনের বাবার সাক্ষ্যগ্রহণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৫
প্রথম দিনে বাদী ও রাজনের বাবার সাক্ষ্যগ্রহণ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হলো শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম।

বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম কার্যদিবসে এ দু’জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।



আদালতের বিচারক মো. আকবর হোসেন মৃধা প্রথম দিনে মামলার বাদী জালালাবাদ থানার বরখাস্তকৃত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম ও রাজনের বাবা আজিজুল ইসলাম আলমের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

এর আগে দুপুর ১২টায় কারাগারে থাকা ১০ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের উপস্থিতিতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা জেরা করেন। এরপর সাক্ষ্য দিতে ওঠেন রাজনের বাবা আজিজুল ইসলাম আলম। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকেও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী বলেন, শিগগিরই দ্রুততার সঙ্গে মামলার নিষ্পত্তি হবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল খালিক বলেন, প্রথম দিনে দু’জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। পূর্ব নির্ধারিত তারিখে আগামী ৪ অক্টোবর আবার সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।

সন্তান হত্যায় ন্যায়বিচার পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে আজিজুল ইসলাম আলম বলেন, আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, রাজন ভ্যান চুরি করেছিল। তবে আমি আগেও বলেছি, এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট। আসামিদের কোনো ভ্যান গাড়িই নেই।

এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর একই আদালতের বিচারক চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় সৌদি আরবে আটক কামরুলসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় চার্জ গঠন করেন।

এদিন আদালতের বিচারক মামলার বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ১, ৪, ৭, ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার থেকে রাজন হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

এ মামলার অভিযুক্তরা হচ্ছেন- সিলেট সদর উপজেলার কুমারগাঁও শেখপাড়ার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ওরফে আলী ও শামীম আলম, দিরাইয়ের বাসিন্দা পাভেল ইসলাম, চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না, হত্যার সময় ভিডিওচিত্র ধারণকারী জালালাবাদ থানার টুকেরবাজার ইউনিয়নের পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের ছেলে নূর আহমদ ওরফে নূর মিয়া, দুলাল আহমদ, আয়াজ আলী, তাজ উদ্দিন বাদল, ফিরোজ মিয়া, আছমত আলী ওরফে আছমত উল্ল্যাহ ও রুহুল আমিন ওরফে রুহেল।

এদের মধ্যে সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলাম, শামীম আলম ও পাভেল ইসলামকে অভিযোগপত্রে ও অভিযোগ গঠনে পলাতক দেখানো হয়েছে।

গত ৮ জুলাই ভোরে চোর অপবাদ দিয়ে শিশু সামিউল আলম রাজনকে (১৩) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রাজন সদর উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের আজিজুল ইসলাম আলমের ছেলে। পৈচাশিক নির্যাতনের প্রায় ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশে-বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ হত্যাকাণ্ডের পর মহানগরীর জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মুহিত আলমসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে রাজনের বাবাও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরেকটি এজাহার দেন।

গত ১৬ আগস্ট সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামসহ ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ হত্যা মামলার  চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার। এর আগে মুহিত আলমসহ ৮ জন এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

গত ২৪ আগস্ট আদালত এ মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন। গত ২৫ আগস্ট জালালাবাদ থানা পুলিশ ৩ পলাতক আসামির মালামাল ক্রোক করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৫
এনইউ/এএএন/আরএম

** শিশু রাজন হত্যার বিচার শুরু বৃহস্পতিবার

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ