ঢাকা: গত দুই মাসের মামলার তথ্য দেওয়া হলেও বেসিক ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৫৬টি মামলার কোনো তথ্য না থাকায় মাসিক সংবাদ সম্মেলনে তোপের মুখে পড়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নিয়মানুযায়ী মাসিক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে দুদকের পক্ষ থেকে দুই মাসের মামলা ও চার্জশিটের লিখিত বক্তব্যের কাগজ সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। এতে চলতি বছরের আগষ্ট ও সেপ্টেম্বরের মামলা ও চার্জশিটের সংক্ষিপ্ত তথ্য ছিলো। ছোটো-খাটো বিভিন্ন মামলার তথ্য থাকলেও বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত কোনো তথ্য না থাকায় তোপের মুখে পড়েন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দুদক কর্মকর্তারা।
মাসিক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়, ‘ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিলি করা কাগজে ১০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে মামলা দায়েরের তথ্য দেওয়া হলেও বেসিক ব্যাংকের ৫৬টি মামলার কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি কেন? সংবাদ সম্মেলনেও কি বেসিক ব্যাংকের ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে?’
এমন প্রশ্নের উত্তরে দুদকের ডিজি শামছুল আরেফিন বলেন, ‘এখানে সংক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন মামলার তথ্য আছে। সব মামলার তথ্য নেই। ’
এরপর ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করা হয়, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুদকে যেসব প্রতিবেদন ও নথিপত্র পাঠানো হয়েছে তাতে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি ছিলো। অর্থমন্ত্রীও বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বলেছেন। দুদক এসব কোনো কিছু আমলে না নিয়ে চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদকে বাদ দিয়ে তাদের নির্দেশে যারা কাজ করেছেন তাদের আসামি করেছে। কেন?’
এমন প্রশ্নের উত্তরে দুদকের পরিচালক নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘অনুসন্ধানকালে যাদের বিরুদ্ধে দালিলিক তথ্য পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা যাদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তদন্তে কারে অপরাধ পাওয়া গেলে খতিয়ে দেখা হবে। ’
এমন উত্তরে প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনারা এখন প্রাথমিক পর্যায় বলছেন। তিনবছর ধরে বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান করছেন। ফলাফল মূল অভিযুক্তকে বাদ। এটা কি কোনো পক্ষের চাপে?’
উত্তরে দুদকের ডিজি শামছুল আরেফিন বলেন, ‘না চাপে নয়। অনুসন্ধান পর্যায়ে আমাদের কিছু আইনি সীমাবদ্ধতা থাকে। যেমন আমরা চাইলেই যেকোনো কিছু জব্দ করতে পারি না। তবে মামলার পরে তদন্তে আমাদের জব্দ করার সুযোগ থাকে। ’
সংবাদ সম্মেলনে ডিজির কাছে প্রশ্ন করা হয়, ‘তদন্তে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে চার্জশিটে আসামি করা হবে কি-না?’
এর উত্তর দুদকের ডিজি শামছুল আরেফিন এর উত্তর না দিয়ে দুদকের পরিচালক নূর মোহাম্মাদকে দিতে ইশারা করেন। নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘তদন্তে কারো কিছু পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
এরপর দুদকের ডিজি শামছুল আরেফিন উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এ বিষয়ে আর কিছু নয়। অন্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করুন প্লিজ। এ বিষয়ে আর কিছু বলবো না। ’
এরপর ব্রিফিংয়ে উপস্থিত একজন সাংবাদিক বলেন, ‘আপাতত এর বাইরে আর প্রশ্ন নয়। এটাই এখন বড় ইস্যু। ’ উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরাও এ কথায় সম্মতি দেন। শেষ হয় দুদকের মাসিক সংবাদ সম্মেলন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দুদকের অপর পরিচালক বেলাল হোসেন এবং দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৫
এডিএ/বিএস