ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আইনি জটিলতায় চট্টগ্রাম বন্দরের যন্ত্রপাতি ক্রয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৫
আইনি জটিলতায় চট্টগ্রাম বন্দরের যন্ত্রপাতি ক্রয় ফাইল ফটো

ঢাকা: আইনি জটিলতায় চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছে সংসদীয় কমিটি। তাই আইনটি সংশোধনের উদ্যোগের কথা জানালেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

যুগের সাথে সঙ্গতি রেখে নীতিমালা করার ওপর জোর দিয়েছে কমিটি।
 
মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয় বলে জানান কমিটির এক সদস্য।
 
কমিটির সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নের জন্য কিছু যন্ত্রপাতি দরকার। কিন্তু যন্ত্রপাতি ক্রয় নীতিমালায় কিছু ঝামেলা রয়েছে। আইনে আছে ৫ বছরের বেশি সময় লিজ দেওয়া যাবে না। এখন যারা লিজ নেবে তারা তো ৫ বছরের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ে আগ্রহী নন। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে যুগের সাথে সঙ্গতি রেখে কিভাবে বিধিমালা করা যায় সেটি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়কে।
 
তিনি বলেন,  বিদ্যমান নীতিমালার কারণে টেন্ডার আহ্বান করা যাচ্ছে না। তাই নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য একটি সাব কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
 
গত আগস্ট মাসে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান চট্টগ্রাম বন্দর রেস্ট হাউজে বন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যন্ত্রপাতি ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য একনেকের (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) অনুমোদিত ২৪৮ কোটি টাকা দিয়ে ২০টি ড্রেজার ও ১০টি নতুন গ্যান্ট্রি ক্রেন কেনা হবে। পুরনো যন্ত্রপাতির বদলে আরও নতুন নতুন যন্ত্রপাতি বন্দরে আনা হবে।

মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় এসব যন্ত্রপাতিসহ আরও কিছু নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার ওঠা-নামা করার সবচেয়ে আধুনিক যন্ত্র গ্যান্ট্রি ক্রেন আছে মাত্র চারটি।

এদিকে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ  এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
 
বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ৪ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ২১৭ একর জমি অবৈধ দখলকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে ২ কিলোমিটার জায়গা  জুড়ে গাছ লাগানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উদ্ধারকৃত জমিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গাছ লাগানো হবে।
 
কমিটি চট্রগ্রাম বন্দরে ড্রেজিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য নতুন একটি ড্রেজার ক্রয়ের জন্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপরিশ করে।
 
এছাড়া বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মংলা-ঘষিয়াখালী  চ্যানেলের পূর্ণ নাব্যতা বজায় রাখা এবং চলমান কার্যক্রমকে সচল রাখার জন্য ৬টি ড্রেজার সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত রাখার বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।
 
দেশের নদী বন্দরগুলোকে সচল ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিদ্যমান পুরাতন আইনগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে কমিটি।
 
কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন, কমিটির সদস্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, তালুকদার আব্দুল খালেক, মো. আব্দুল হাই, মো. নূরুল ইসলাম সুজন, মো. হাবিবর রহমান, এম আব্দুল লতিফ, রণজিৎ কুমার রায়, মো. আনোয়ারুল আজীম (আনার)  এবং মমতাজ বেগম অ্যাডভোকেট।
 
এছাড়াও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৫
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।