ঢাকা: মুদ্রাপাচার ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধে বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপের সত্যতা যাচাইয়ে ঢাকায় অবস্থানরত আন্তর্জাতিক অর্থপাচার বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের বৈঠক চলছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)।
আট সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন আন্তর্জাতিক মানিলন্ডারিং বিশেষজ্ঞ দলের (এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ-এপিজি) সেক্রেটারিয়েটের কর্মকর্তা ডেভিড শিনন।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের ৫ম তলায় দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শুরু হয়। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এর আগে গত রোববার (১১ অক্টোবর) দুদকে প্রথম বৈঠক করে প্রতিনিধি দলটি।
মঙ্গলবারের বৈঠকে দুদকের পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীন ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজ্যান্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।
এপিজি’র আট সদস্য গত শনিবার (১০ অক্টোবর) ঢাকায় আসেন। দু’সপ্তাহের সফরে আসা বিশেষজ্ঞ দলটি অর্থ, পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করবে।
দুদক সূত্র জানায়, এপিজি’র সঙ্গে বৈঠক সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি কয়েকদিন আগে বিশদ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে। এ বৈঠকে অর্থপাচার সংক্রান্ত দুদকের অনুসন্ধান-মামলাসহ নানা বিষয় বিশেষজ্ঞদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। সিআইডি ও বিএফআইইউও তাদের কার্যক্রম তুলে ধরছে এপিজি’র কাছে। মুদ্রাপাচার ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধে বাংলাদেশের অগ্রগতিই মূলত এপিজি’র কাছে তুলে ধরছে সংস্থাগুলো।
২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়নের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় নাম ছিল বাংলাদেশের। তবে বিশ্বের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ধারণকারী সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর সংস্থাটির নজরদারির মধ্যে পড়ে বাংলাদেশ। এ সময় তারা ৪০টি শর্ত প্রতিপালনের পরামর্শ দেয়।
একই সঙ্গে সংস্থাটি তাদের দেওয়া শর্ত ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি-না, তারও মূল্যায়ন করে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার নানা পদক্ষেপ নেয় এবং তার তথ্য ওই সংস্থাটিকে সরবরাহ করে।
এসবের ফলে বাংলাদেশ মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়নে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা থেকে ২০১৪ সালে বের হয়ে আসে। ওই সময়ে বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ সত্যিকার অর্থেই যথাযথ ছিল কি-না, নাকি মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল, তা সরেজমিন খতিয়ে দেখতে ঢাকায় এসেছে মানিলন্ডারিং রোধ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দলটি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
এডিএ/জেডএস