খুলনা: খুলনায় পৈশাচিক নির্যাতনে নিহত শিশু রাকিব (১৩) হত্যা মামলার টানা সাক্ষ্যগ্রহণের চতুর্থ দিনে প্রত্যক্ষদর্শী রঙ বিক্রেতা রবিউল ইসলাম, খুলনা সদর থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাসসহ ১১ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক (অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) দিলরুবা সুলতানা এ সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
এ নিয়ে গত চারদিনে চার্জশিটভুক্ত ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩২ জন সাক্ষ্য দিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সাক্ষ্যগ্রহণের শেষদিনে আরও ৭/৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা রয়েছে।
আদালতে সাক্ষ্য প্রদানকারীদের অন্যরা হলেন, পুলিশের এসআই তাপস কুমার, এএসআই আল মামুন, সাক্ষী জহিরুল ইসলাম, তহমিনা, আসাদুজ্জামান, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফর খলিফা, খসরুল আলম ও নূরুল ইসলাম।
মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সমন্বয়কারী ও বাদীপক্ষের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী রঙ বিক্রেতা রবিউল ইসলামের বরাত দিয়ে বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে শিশু রাকিব একটি সাইকেলে চড়ে রবিউলের দোকানে রঙ কিনতে যায়। তার কাছ থেকে রঙ কিনে ফেরার পথে আসামি মিন্টু জোর করে রাকিবকে তুলে নিয়ে শরীফের গ্যারেজে যান। সেখানে আসামিরা রাকিবের ওপর নির্যাতন চালান’।
গত ৩ আগস্ট বিকেলে খুলনা নগরীর টুটপাড়া কবরখানা মোড়ের কাছে শরীফ মোটর্সে মোটরাইকেলে হাওয়া দেওয়া কম্প্রেসার মেশিন দিয়ে শিশু রাকিবের মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত বায়ূর চাপে রাকিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
শিশু রাকিবকে নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শরীফ ও মিন্টু মিয়াকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে ক্ষুব্ধ জনতা। পরে শরীফের মা বিউটি বেগমকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পরদিন নিহত শিশুর বাবা টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা ট্রাকচালক মোঃ নুরুল আলম বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২৫ আগস্ট এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাজী মোস্তাক আহমেদ এজাহারভুক্ত তিন আসামি মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক ওমর শরীফ, তার কথিত চাচা মিন্টু খান ও শরীফের মা বিউটি বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৬ সেপ্টেম্বর মহানগর হাকিম আদালত বিচারকার্য শুরুর জন্য মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠান।
গত ৫ অক্টোবর তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৫
এমআরএম/এএসআর