ঢাকা: রাজধানীর ইস্কাটনে সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে সিনিয়র সচিব, সচিব ও গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে সরকার। এসব কর্মকর্তারা রাষ্ট্রের অনেক দায়িত্বপূর্ণ ও গুরুত্ববহ কাজ করেন।
তাই এসব আমলাদের জন্য নিরাপদ ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত আবাসনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গণপূর্ত অধিদফতর। সকল সচিবদের জন্য একই ধরনের আবাসন ব্যবস্থা করা হবে।
গণপূর্ত অধিদফতর সূত্র জানায়, রমনার ইস্কাটনে ৭ দশমিক ৬৩১ বিঘা সরকারি জমিতে বিদ্যমান পাঁচটি টেনামেন্ট হাউজ(১-৫নং) রয়েছে। সেখানে পাঁচ জন গুরুত্ত্বপূর্ণ ব্যক্তি বসবাস করেন। প্রকল্পের আওতায় এ সকল ভবন ভেঙ্গে তিনটি ভবনে ১১৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে।
এতে ১১৪ জন সিনিয়র সচিব, সচিব ও গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের পরিবারকে আবাসন সুবিধা দেওয়া হবে।
গণপূর্ত অধিদফতর সূত্র জানায়, ঢাকার ইস্কাটনে সিনিয়র সচিব, সচিব ও গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের জন্য আবাসন ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
সরকারি স্থাপত্য বিভাগের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় সমানভাবে সচিবদের আবাসন ব্যবস্থা করা হবে। আমরা বর্তমানে দেখছি, কোনো সচিব ১৫শ’ বর্গফুটের বাসায় বসবাস করছেন, কোনো সচিব আবার দুই হাজার বর্গফুটের বাসায় থাকছেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সকল সচিবদের জন্য একই ধরনের আবাসন ব্যবস্থা হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে অনেক সচিব ডুপ্লেক্সে বাস করছেন, অনেক সচিব আবার কম সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন বাসায় আছেন। তাদের কথা চিন্তা করেও এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। অনেক অতিরিক্ত সচিব পদোন্নতি পেয়ে সচিব হয়ে গেছেন। কিন্তু আগের বাসায়ই বসবাস করছেন। সকল সচিবদের একই ধরনের আবাসন ব্যবস্থা দেওয়ার জন্য সরকার চিন্তা করছে। সে ধারাবাহিকতায় এ প্রকল্প।
গণপূর্ত অধিদফতর সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় তিনটি ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ২০তলা ভবনে ৩৮টি করে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। সিনিয়র সচিবদের জন্য ৩৪৯০ বর্গফুটের ৩৮টি ফ্ল্যাট ও সচিবদের জন্য ৩৪৭০ বর্গফুটের ৩৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। অন্যদিকে গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের জন্য ৩৪৫৫ বর্গফুট আয়তনের ৩৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
৩৭১ দশমিক ৬০ বর্গমিটার আয়তনের চারতলা বিশিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি পানি সরবরাহ ও বিদ্যুতায়নের আধুনিক ব্যবস্থা থাকবে এখানে। ৩৭১ দশমিক ৬০ বর্গমিটার আয়তনের চারতলা বিশিষ্ট কমিউনিটি বিল্ডিংও নির্মাণ করা হবে।
আমলাদের জন্য আধুনিক আবাসন ব্যবস্থার পাশাপাশি আরও থাকছে সুইমিংপুল লন, টেনিস ও ব্যাডমিন্টন কোর্ট, গভীর নলকূপ, এসটিপি, ড্রিংকিং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন ইত্যাদি।
এদিকে মন্ত্রীদের জন্য হেয়ার রোড ও মিন্টো রোডে নির্মিত হবে ২৮টি ফ্ল্যাট। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৪ কোটি টাকা। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রীদের পরেই সচিবদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৫
এমআইএস/এএসআর