ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘হারিকেনের আলো চাই, সুন্দরবন ধ্বংসকারী বিদ্যুৎ চাই না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৫
‘হারিকেনের আলো চাই, সুন্দরবন ধ্বংসকারী বিদ্যুৎ চাই না’ ছবি: দীপু / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ১৬-১৮ অক্টোবর ঢাকা থেকে সুন্দরবন অভিমুখে রোডমার্চ শুরু করেছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। এর আগে শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে ‘সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে রাজধানীর প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আমরা হারিকেনের আলো চাই, কিন্তু সুন্দরবন ধ্বংস করে কোনো ধরনের বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্পই আছে, কিন্তু সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই।

সুন্দরবনে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অনেক মানুষ আশ্রয়স্থল হারাবে।

রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতা করে সমাবেশে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, দেশি-বিদেশি পরামর্শ অগ্রাহ্য করে সরকার রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করছে। বিদ্যুৎ দেশ ও সভ্যতার জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। কিন্তু যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সুন্দরবন ধ্বংস হবে সেই বিদ্যুৎ চাই না। দরকার হয় আমরা হারিকেনের আলো ব্যবহার করবো। হারিকেনের আলোতে জীবন চালাতে রাজি আছি কিন্তু সুন্দরবন ধ্বংস করে দিতে রাজি না। আমরা কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ চাই না, দরকার হয় গ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। ’

তেল-গ্যাস-রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, কোনো উন্নয়ন প্রকল্প যদি সুন্দরবন ধ্বংস করে তবে তাহলে উন্নয়ন প্রকল্প বলা যাবে না। সুন্দরবন সম্পর্কে সরকার ভুল তথ্য দিয়ে এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে। রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প মানে লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া। সুন্দরবন নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করছে। কিছুতেই সুন্দরবন ধ্বংসের প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে দেব না। সুপার ক্রিটিক্যাল হলেও রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। ’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সুন্দরবনে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প মানে ১৬ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করা। প্রাণ ও জীববৈচিত্র কারোর একার নয়। আমাদের আন্দোলন ১৬ কোটি মানুষের হয়ে আন্দোলন। সরকারকে অতিবিলম্বে রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ নির্মাণ প্রকল্প থেকে সরে আসতে হবে। ’

গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতামত সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সরকার রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশারেফা মিশু বলেন, দেশের মানুষ এমনিতেই নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে। তাই আমরা দেশের মানুষকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দিতে পারি না।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বিডি রহমতুল্লাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক আকমল হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে সুন্দরবন অভিমুখে রোডমার্চ শুরু হয়। ১৮ই অক্টোবর সুন্দরবন সংলগ্ন স্থানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

রোড মার্চে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, শ্রমিক-কৃষক সমাজবাদী দল, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনসহ কয়েকটি বাম দল।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৫
এমআইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।