ঢাকা: হঠাৎ করেই মিরপুরের মার্কস ডেন্টাল কলেজ রুপ নিচ্ছে মার্কস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। তবে ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এমনকি অধ্যক্ষকে না জানিয়েই ঘটেছে পুরো বিষয়টি।
গত বেশ কিছুদিন ধরেই ফের ডেন্টাল কলেজে ফিরে যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছেন কলেজটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, বর্তমানে কলেজটিতে বিডিএস’র আটটি ব্যাচ রয়েছে। ভর্তির সময় তারা কলেজে উন্নয়ন ফি বাবদ ৫ লাখ টাকা করে জমা দিয়েছেন। এছাড়াও বাৎসরিক সেশন চার্জ হিসেবে দেওয়া হয় ৪০ হাজার টাকা করে। আর বেতন প্রথম দুই বছর প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে এবং তৃতীয় বছর থেকে আট হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা এতো টাকা দেওয়ার কারণ মার্কস একটি পরিপূর্ণ ডেন্টাল কলেজ বিবেচনায়। এখন এটিকে একটি মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে পরিণত করা হয়েছে। যার মর্যাদা কখনোই এক নয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ইউনিটে ডেভলপমেন্ট ফি, ভর্তি ফি সবকিছুই কম হয়। অথচ আমরা কলেজের অধীনে এসব খরচ দিয়েছি।
গত এক বছর ধরেই কলেজটিতে চলছে কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়ে। গত ৩ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে কলেজের শিক্ষকদের বেতন।
কোনো প্রচার মাধ্যমে নাম প্রকাশ পেলে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে এরই মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বার্ষিক সভা হওয়ার কথা ছিল কিছুদিন আগে। এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মার্কস ডেন্টাল কলেজ এখন মার্কস মেডিকেল কলেজের অধীনে একটি ইউনিট। তাই কলেজই বার্ষিক সভা করবে। এমনকি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল খালেক বিষয়টি সর্ম্পকে জানতেন না বলে জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষকরা।
তারা জানান, বর্তমানে কলেজের ১০ কাঠা জমি রয়েছে। এখন সেটিও মেডিকেল কলেজের নামে নিতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, কলেজটিতে বর্তমানে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। প্রতি বছর ৫০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয় এখানে। এরমধ্যে গত ২ বছরে কিছু আসন ফাকাঁ ছিল।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির প্রচার ও সংযোগ সম্পাদক ডা. জ্যোর্তিময় দাস বাংলানিউজকে বলেন, মালিকপক্ষ কলেজ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে এ হীন কাজটি করেছেন। মূলত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের উন্নয়ন ফি, বেতন সবকিছুই ডেন্টাল কলেজের চেয়ে বেশি। এ কারণেই মূলত মেডিকেল কলেজে রুপান্তর করছে মালিকরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির সভাপতি ডা. আবুল কাশেম বৃহস্পতিবার বাংলানিউজকে বলেন, কলেজটি প্রতিষ্ঠার সময় আমরা নোটারি পাবলিকের নামে ডেন্টাল কলেজের নামে জায়গাটি বরাদ্দ করতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা সেটি করেনি। এখনো তারা আলাদাভাবে মেডিকেল কলেজ করতে পারেন, তবে ডেন্টাল কলেজ রাখতে হবে এবং কলেজের জমিও দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। যেসব শিক্ষার্থীরা ডেন্টাল কলেজের অধীনে ভর্তি হয়েছিল, তারা এখন ডেন্টাল ইউনিটের অধীনে সার্টিফিকেট নিতে চাইবে কিনা, সেটাও দেখতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে মার্কস ডেন্টালের প্রশাসন বিভাগের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
এমএন/জেডএস